যশোরের মনিরামপুরের গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মোজাফফর হোসেন নিখোঁজের ৯ দিন পর তাঁর সন্ধান মিলেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার বেগারিতলা বাজার থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। এরআগে রাত ১১টার দিকে বাজারের লোকজন তাঁকে সেখানে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে থানায় খবর দেন।
আজ শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ভোরে তাঁকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি মনিরামপুর হাসপাতাল সংলগ্ন ঠটে কামালপুরে নিজ বাড়িতে আছেন।
মোজাফফর হোসেন দাবি করেছেন, তিনি নিখোঁজ বা অপহরণের শিকার হননি। দোকান নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় মনের কষ্টে তিনি ঢাকার সাভারে চলে গিয়েছিলেন।
গত সপ্তাহের বুধবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরেননি মুজাফফর। স্বামীকে না পেয়ে পরের দিন বৃহস্পতিবার তাঁর স্ত্রী খাদিজা বেগম মনিরামপুর থানায় স্বামীর ‘নিখোঁজ’ সংক্রান্ত একটি জিডি করেন। এরপর মুজাফফরের সন্ধানে নামে পুলিশ।
এদিকে মুজাফফরের উদ্ধারের খবর পেয়ে আজ সকালে সরেজমিন তাঁর কামালপুরের বাড়িতে যান গণমাধ্যম কর্মীরা। এসময় তাঁকে কিছুটা অস্বাভাবিক দেখা গেছে। নয় দিন নিখোঁজ থাকার বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের সাথে স্পষ্ট কথা বলতে চাননি।
মোজাফফর হোসেন বলেন, মনিরামপুর বাজারে সরকারি জমিতে আমার একটি টোঙ দোকান আছে। সেখান থেকে আমাকে সরে যেতে বলেছেন বাজারের সভাপতি মোশাররফ হোসেন। গত ২৫ জানুয়ারি (বুধবার) বিকেলে এ নিয়ে পৌরসভার সামনে একটা বৈঠক হয়। সেখানেও আমাকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত দেয়। এরপর ওই রাতে মনের কষ্টে আমি ঢাকার সাভারে চলে যাই।
মুজাফফর বলেন, ঢাকায় যাওয়ার পথে আমার মোবাইল হারিয়ে যায়। মনের অবস্থা ভাল ছিল না। এজন্য আমি পরিবারের সাথে যোগাযোগ করিনি। বৃহস্পতিবার রাতে আমি ঢাকা থেকে পরিবহনে করে বাড়ি ফিরছিলাম। পরিবহন আমাকে যশোর শহরের মনিহার মোড়ে নামিয়ে দেয়। এরপর ইজি বাইকে চড়ে মনিরামপুরে রওয়ানা হই। ইজিবাইক চালক মনিরামপুরে আসতে রাজি না হওয়ায় আমাকে বেগারিতলা বাজারের উত্তর মাথায় নামিয়ে দেন। এরপর হেঁটে আসার সময় বেগারিতলা বাজারে পড়ে যাই। পরে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে যশোর সদর হাসপাতালে নেয়। সেখান থেকে এনে থানায় রাখে। আজ ভোরে আমাকে স্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছে।
বেগারিতলা এলাকার ইমরান হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১১ টায় যশোরের দিক থেকে দৌঁড়ে এসে বেগারতলা বাজারে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান এক ব্যক্তি। একটু সুস্থ হওয়ার পর আমরা তাঁর পরিচয় জেনে থানায় খবর দিই। পরে পুলিশ তাঁকে নিয়ে যায়।
মনিরামপুর বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, মুজাফফরের দোকানসহ তিনটি দোকানের জায়গা আমি সরকারের কাছ থেকে গত বছর ইজারা নিয়েছি। মুজাফফরকে সামনের অংশ ছেড়ে পিছনের দিকে আসতে বলেছি। নয় দিন আগে একটা সালিশের পর মুজাফফর ‘উধাও’ হয়ে যায়। এরপর অনেকে এ ঘটনায় আমাকে দায়ী করার চেষ্টা করেছেন।
মনিরামপুর থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কর বলেন, মুজাফফর আত্মগোপনে ছিলেন। উদ্ধারের পর তাঁকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।