বাগেরহাটের শরণখোলার সাউথখালী ইউনিয়নের তাফালবাড়ী বাজারের আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে দুই পক্ষ। এ ঘটনায় শনিবার (২৮জানুয়ারি) সকাল থেকে সমস্ত দোকানপাট বন্ধ করে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এর আগেরদিন শুক্রবার দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত স্থানীয় ওই বাজারটির ব্যবসায়ী ও পার্শ্ববর্তী রায়েন্দা ইউনিয়নের জমাদ্দার বংশের লোকজনের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ওই ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুই পক্ষের চার জনতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
বাজারের ব্যবসায়ী মো. পলাশ মাহামুদ জানান, পার্শ্ববর্তী রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর শাহজাহান বাদল জমাদ্দারের ছেলে সৈকত জমাদ্দার ও শ্যালক মিঠু শিক্ষক আল-আমীন খানকে বাজারের মধ্যে মারপিট করে। এঘটনায় ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে তারা আরো ক্ষুব্ধ হয়ে বাজারের ব্যবসায়ী, পথচারী ও তাফালবাড়ী বাজারের বাসিন্দারের ওপর একের পর এক হামলা করে। তারা তাফালবাড়ী ব্রিজের ওপর থেকে ব্যবসায়ী ও পথচারীদের ওপর বৃষ্টির ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এ সময় পথচারী মাসুম হাওলাদার নামে একজনকে কুপিয়ে জখম করে।
বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটিরি সাধারণ সম্পাদক মো. ওমর সরদার জানান, তাদের পার্শ্ববর্তী রায়েন্দা ইউনিয়নের চালরায়েন্দা গ্রামের জমাদ্দার বংশের একদল উচ্ছৃঙ্খল যুবক দীর্ঘদির ধরে তাফালবাড়ী বাজারের এসে ত্রাস সৃষ্টি করে বাজারটি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালায়। তারা বিভিন্ন সময় দোকান থেকে মালামাল বাকি নিয়ে টাকা পরিমোধ করে না। টাকা চাইতে গেলে ব্যবসায়ী মারধর ও লাঞ্ছিত করে। অন্য এলাকা থেকে এসে তারা বাজারের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন করায় সবাই অতিষ্ট হয়ে ওঠে। শুক্রবারও একইভাবে এক ব্যবসায়ী ও এক শিক্ষককে মারধর করে। এঘটনার জেরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত সমস্ত দোকানপাট বন্ধ থাকবে বলেও হুশিয়ারি দেন ওমর সরদার।
সাউথখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জমাদ্দার বাড়ির ছেলেরা তাফালবাড়ী বাজারের এসে নানা অঘটন ঘটিয়ে চলেছে। তাদের নেতা শাহাজাহান বাদল জমাদ্দারকে বলার পর তাদের ছেলেরা আরো বেশি করে হামলা চালিয়েছে। এর একটা শান্তিপূর্ণ সমাধান দরকার।
প্রতিপক্ষের জমাদ্দার বংশের নেতা ইউপি সদস্য শাহজাহান বাদল জমাদ্দা বলেন, একচেটিয়া আমাদের ছেলেদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে। এটা সঠিক না। তারা আমার কাছে বিচারের দায়িত্ব দেওয়া হলেও আমাকে বাজারে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
শরণখোলা থানার ওসি মো. ইকরাম হোসেন বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পিরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরই আলম সিদ্দিকী বলেন, তাফালবাড়ী বাজার বন্ধের খবর তার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ গ্রহন করা হবে।