ঢাক ঢোলের বাজনায়, গানের তালে তালে এ যেন আনন্দময় উৎসব। সেই সাথে কাসার ঘন্টার তালে তালে চলে লাঠির কসরত। প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা ও পাল্টা আঘাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন লাঠিয়ালরা। এমন দৃশ্য দেখে আনন্দে ফেটে পড়ছেন দর্শকরা। সেই সাথে হাততালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে লাঠিয়ালদের।
আজ রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের আয়োজনে এমন উৎসব হয়ে গেলো শহরের উজির আলী স্কুল মাঠে। যা দেখতে ভীড় করেন শিশু-কিশোরসহ নানা বয়সী মানুষ। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত লাঠির এই কসরত দেখে মুগ্ধ হয় দর্শকরা।
শহরের কাঞ্চননগর থেকে রেখা দাস বলেন, আমি লাঠিখেলার কথা শুনেছি কিন্তু কোনদিন দেখিনি। আজ দেখলাম অনেক ভালো লাগছে দেখতে।
শহরের উদয়পুর এলাকার বিজয় হোসেন বলেন, ‘গ্রামে লাঠিখেলা হয় মাঝে মাঝে। কিন্তু শহরে তো লাঠিখেলার আয়োজন করা হয় না। নতুন বছর উপলক্ষে আজ লাঠিখেলার আয়োজন করা হয়েছে শুনে এলাম। দেখতে অনেক ভালো লাগছে।’
একই এলাকার রানা আহম্মেদ বলেন, ‘গ্রামীণ ঐতিহ্য ধরে রাখতে এই ধরনের আয়োজন প্রতি বছর করা দরকার। আজ এখানে আয়োজন করা হয়েছে এ জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।’
বাংলাদেশ লাঠিয়াল বাহিনী ঝিনাইদহ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান খোকা বলেন, ‘বাংলার ঐতিহ্য এই লাঠিখেলা হারিয়ে যাওয়ার পথে। আমরা চেষ্টা করছি এটি ধরে রাখতে। সেই সাথে নতুন নতুন প্রজন্মকে এই ঐতিহ্যের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
জানতে চাইলে লাঠিখেলার আয়োজক জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ড. এম হারুন অর রশিদ বলেন, ‘এ বছর থেকে আমরা জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে শুরু করেছি হারানো এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে। আমরা এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে চাই। চাই নতুন প্রজন্ম যেন আমাদের ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে পারে। সেই সাথে শহরের মানুষ যেন আনন্দ উপভোগ করতে পারে।’
দিনভর খেলায় ঝিনাইদহের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা ১৫টি লাঠিয়াল দলের ৬৫ জন খেলোয়াড় অংশ নেয়। খেলা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।