বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, সকাল ৯:২২
বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩,সকাল ৯:২২

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

২৪ ডিসেম্বর, ২০২২,

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

৪:৩২ pm

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বিদ্যাধর ব্রাহ্মন জাটিগ্রাম সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহমিনা খানমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে ঝড় বইছে উপজেলার আনাচে-কানাচে। এ বিদ্যালয়ে মোট ৪ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। এরমধ্যে তহমিনা খানম ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের দায়িত্বে থাকলেও অধিকাংশ সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে মিটিংয়ের কথা বলে বাহিরে থাকেন তিনি। বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজের কথা বলে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মাস শেষে নিজে মনগড়া রেজুলেশন তৈরি করে পরিচালনা কমিটির স্বাক্ষর জাল করেন তিনি।

শুধু তাই নয়; বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দকৃত কম্পিউটার ও প্রজেক্টর প্রধান শিক্ষক বাড়িতে নিয়ে নিজ কাজে ব্যবহার করছেন। পরীক্ষার সময়ের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে থাকেন, এক্ষেত্রে যারা টাকা দিতে পারে না তাদেরকে পরীক্ষায় ফেলের ভয় দেখানো বলে জানা গেছে। প্রধান শিক্ষকের ছত্রছায়ায় এক শিক্ষক অন্য শিক্ষকের চরিত্র নিয়ে বাজে মন্তব্য করে চলেছেন। কখনও কখনও শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি হতে দেখা গেছে। সেক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের জানালা দরজা না আটকিয়ে শিক্ষকগণ বাড়িতে চলে যায়। কর্মদিবস পার হয়ে গেলেও রাত ৮ টার সময় বিদ্যালয়ের পতাকা উড়তে দেখা যায়। স্থানীয় কোন ব্যক্তি কিছু বলতে গেলেই প্রধান শিক্ষক পরের দিন ওই ব্যক্তিকে বিদ্যালয়ের প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। বিদ্যালয়ের রেজুলেশন খাতায় যে সব খাতে প্রধান শিক্ষক বরাদ্দ নিয়েছেন সেই সব খাতের অনেক উপকরণ বিদ্যালয়ে নেই বললেই চলে।

প্রধান শিক্ষক তহমিনা খানমের এসব কর্মকান্ডে বিব্রত ও ক্ষুব্ধ অত্র বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও এলাকাবাসী। সম্প্রতি এসব অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট সংশ্লিষ্ট এলাকার ৮৯ ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. দিদারুল আলম। গত ১৫ ডিসেম্বর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিন তদন্ত করে ওই এলাকার প্রায় অর্ধশত ব্যক্তির মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেছেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোমিন উদ্দীন।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোমিন উদ্দীন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে বিলম্বে আসা-যাওয়া, শ্রেণিতে পাঠদানে অমনোযোগী, সহকর্মী ও এলাকার জনগণের সাথে অসভ্য এবং অশ্লীল আচরণ, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর জাল, নিয়মিত এসএমসি মিটিং না করা, পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের অধিক ফি নির্ধারণ, বিদ্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন ও মেরামতের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, জাতীয় দিবস যথাযথ ভাবে পালন না করাসহ অসংখ্য মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তহমিনা খানম বলেন, ‘শিক্ষা সফরে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য দিদারুল আলমের ইচ্ছা যে সকল শিক্ষার্থী চাঁদা দিতে পারবে না তারাও শিক্ষা সফরে যাবে। এই নিয়ে তার সাথে বাকবিতন্ডা হয়েছে। তবে যেসব অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে, তা সব মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।’

আজ শনিবার আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রীতিকণা বিশ্বাস বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট পাঠানো হবে। ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা স্যারই ব্যবস্থা নিবেন।’


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/charidik/public_html/wp-content/themes/jnews/class/Module/Block/Block_9_View.php on line 13

Related Posts

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি

২৪ ডিসেম্বর, ২০২২,

৪:৩২ pm

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বিদ্যাধর ব্রাহ্মন জাটিগ্রাম সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তহমিনা খানমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে ঝড় বইছে উপজেলার আনাচে-কানাচে। এ বিদ্যালয়ে মোট ৪ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। এরমধ্যে তহমিনা খানম ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের দায়িত্বে থাকলেও অধিকাংশ সময় বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে মিটিংয়ের কথা বলে বাহিরে থাকেন তিনি। বিদ্যালয়ের উন্নয়নমূলক কাজের কথা বলে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। মাস শেষে নিজে মনগড়া রেজুলেশন তৈরি করে পরিচালনা কমিটির স্বাক্ষর জাল করেন তিনি।

শুধু তাই নয়; বিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দকৃত কম্পিউটার ও প্রজেক্টর প্রধান শিক্ষক বাড়িতে নিয়ে নিজ কাজে ব্যবহার করছেন। পরীক্ষার সময়ের শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে পরীক্ষায় পাশ করিয়ে থাকেন, এক্ষেত্রে যারা টাকা দিতে পারে না তাদেরকে পরীক্ষায় ফেলের ভয় দেখানো বলে জানা গেছে। প্রধান শিক্ষকের ছত্রছায়ায় এক শিক্ষক অন্য শিক্ষকের চরিত্র নিয়ে বাজে মন্তব্য করে চলেছেন। কখনও কখনও শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি হতে দেখা গেছে। সেক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের জানালা দরজা না আটকিয়ে শিক্ষকগণ বাড়িতে চলে যায়। কর্মদিবস পার হয়ে গেলেও রাত ৮ টার সময় বিদ্যালয়ের পতাকা উড়তে দেখা যায়। স্থানীয় কোন ব্যক্তি কিছু বলতে গেলেই প্রধান শিক্ষক পরের দিন ওই ব্যক্তিকে বিদ্যালয়ের প্রবেশ করতে নিষেধ করেন। বিদ্যালয়ের রেজুলেশন খাতায় যে সব খাতে প্রধান শিক্ষক বরাদ্দ নিয়েছেন সেই সব খাতের অনেক উপকরণ বিদ্যালয়ে নেই বললেই চলে।

প্রধান শিক্ষক তহমিনা খানমের এসব কর্মকান্ডে বিব্রত ও ক্ষুব্ধ অত্র বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও এলাকাবাসী। সম্প্রতি এসব অনিয়মের প্রতিকার চেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট সংশ্লিষ্ট এলাকার ৮৯ ব্যক্তির স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. দিদারুল আলম। গত ১৫ ডিসেম্বর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিন তদন্ত করে ওই এলাকার প্রায় অর্ধশত ব্যক্তির মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করেছেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোমিন উদ্দীন।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোমিন উদ্দীন বলেন, ‘প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে বিলম্বে আসা-যাওয়া, শ্রেণিতে পাঠদানে অমনোযোগী, সহকর্মী ও এলাকার জনগণের সাথে অসভ্য এবং অশ্লীল আচরণ, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর জাল, নিয়মিত এসএমসি মিটিং না করা, পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের অধিক ফি নির্ধারণ, বিদ্যালয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন ও মেরামতের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, জাতীয় দিবস যথাযথ ভাবে পালন না করাসহ অসংখ্য মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক তহমিনা খানম বলেন, ‘শিক্ষা সফরে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের চাঁদা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য দিদারুল আলমের ইচ্ছা যে সকল শিক্ষার্থী চাঁদা দিতে পারবে না তারাও শিক্ষা সফরে যাবে। এই নিয়ে তার সাথে বাকবিতন্ডা হয়েছে। তবে যেসব অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে, তা সব মিথ্যা বলে তিনি দাবি করেন।’

আজ শনিবার আলফাডাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রীতিকণা বিশ্বাস বলেন, ‘লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত করা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট পাঠানো হবে। ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জেলা স্যারই ব্যবস্থা নিবেন।’


Warning: Trying to access array offset on value of type bool in /home/charidik/public_html/wp-content/themes/jnews/class/Module/Block/Block_9_View.php on line 13

Related Posts