বরগুনার তালতলী উপজেলার হাড়িপাড়া গ্রামে চিকিৎসা এবং ভরণ-পোষণের খরচের দাবি করায় বৃদ্ধ বাবা আব্দুল হাই হাওলাদারকে (৯০) মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ছেলের বিরুদ্ধে। আহত ওই পিতাকে তার অন্য ছেলেরা উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা দিয়েছেন।
জানা গেছে, উপজেলার হাড়িপাড়া গ্রামের আব্দুল হাই হাওলাদারের ৮ সন্তান। সবার বড় নাসির হাওলাদার। অন্য সন্তান জন্মের আগে আব্দুল হাই হাওলাদার তার বড় ছেলে নাসির হাওলাদারের নামে সাড়ে ৪ বিঘা জমি কবলা করেন। আজ বুধবার সকালে আব্দুল হাই হওলাদার তার বড় ছেলে নাসির হাওলাদারকে তার টাকায় কবলা করা জমি অন্য ছেলেদের মধ্যে বন্টন করে দিতে বলেন এবং তার নিকট ভরণ-পোষণ ও চিকিৎসা খরচ বাবদ প্রতি মাসে টাকা দাবি করেন। পুত্র নাসির হাওলাদার বাবাকে মাসিক খরচের টাকা এবং তার নামের জমি অন্য ভাইদের মধ্যে বন্টন করে দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বৃদ্ধ বাবা আব্দুল হাই হাওলাদার এবং ছেলে নাসির হাওলাদারের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
এক পর্যায়ে ছেলে নাসির হাওলাদার বাবাকে কিল-ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। এতে তিনি বাম হাটু এবং কোমড়ে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়। বাবাকে রক্ষার জন্য মেঝ ছেলে আতাউর রহমান এগিয়ে গেলে নাসির হাওলাদার তাকেও মারধর করে এবং হাত কামড়ে গুরুতর আহত করে। আহত বাবাকে অন্য ছেলেরা উদ্ধার করে আমতলী হাসপাতালে এনে চিকিসা করান।
মেঝ ছেলে আতাউর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘বাবাকে বড় ভাইয়ের মারধর থেক্ষে রক্ষার জন্য আমি এগিয়ে গেলে আমাকেও মারধর করে এবং আমার হাত কামড়ে গুরুতর আহত করে। আমি আমতলী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছি।’
আহত বৃদ্ধ বাবা আব্দুল হাই হাওলাদার কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমি এখন এই বৃদ্ধ বয়সে বড়ই অসহায়। কত কষ্ট করে সন্তানদের লালন-পালন করেছি। বড় ছেলে নাসিরের নামে জমি কবলা রেখেছি। এখন সে আমাকে খাওন খরচ এবং ওষুধের টাকা চাইলে মারধর করে। আমার টাকায় রাখা জমি এখন অন্য ভাইদের দিতে চায় না। আমি এর বিচার চাই।’
অভিযুক্ত ছেলে নাসির হাওলাদার বাবা আব্দুল হাই হাওলাদারকে মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘ছোট ভাইয়ের সাথে গন্ডগোলের সময় আঘাত পেতে পারে।’ খাওন এবং চিকিৎসা খরচের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘সে তার নিজের টাকায় চলেন।’
উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সর চিকিৎসক ডা. মেহেরিন বলেন, ‘বৃদ্ধ আব্দুল হাই হাওলাদারের শরীরে মারধরের চিহ্ন রয়েছে।’
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’