একদিনের ব্যবধানে যশোরের মুনিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়নে আবার ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এবার ছেলের বুকে পিস্তল ও গলায় চাকু ঠেকিয়ে মাকে জিম্মি করে ডাকাতরা ৬০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করেছে। রোববার (২৭ নভেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে উপজেলার সরসকাঠি গ্রামে মোতালেব হোসেনের বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে।
ওই গ্রামের মোতালেব হোসেনের স্ত্রী নাজমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী ঢাকায় চাকরি করেন। ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে নয়নকে নিয়ে আমি বাড়িতে থাকি। রোববার রাত ১টার দিকে গ্রিলের তালা ভেঙে কালো কাপড়ে মুখ ঢাকা ৬-৭ জন ঘরে ঢোকে। তারা আমার ছেলের বুকে পিস্তল ও গলায় চাকু ধরে আমাকে জিম্মি করে ফেলে। পরে আমাকে বেধে মারপিট করে নগদ ৬০ হাজার টাকা ও স্বর্ণের কানের দুল নিয়ে যায়।’
সরসকাটি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, গত শুক্রবার রাতে কোদলাপাড়া গ্রামে ডাকাতি হওয়ার পর রাতে পুলিশের জোরদার টহল ছিল। রোববার রাতে পুলিশের সাথে আমরা গ্রামবাসীরা রাস্তায় পাহারায় ছিলাম। এর মধ্যে রাত ১টার দিকে মাঠ দিয়ে ৬-৭ জনের মুখোশধারী ডাকাত দল গ্রামের মোতালেব হোসেনের বাড়ির গেটের তালা ভেঙে ডাকাতি করেছে। এ সময় পুলিশ এলাকায় টহলে ছিল। ডাকাতির খবর পাওয়া মাত্র থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ নিয়ে গত এক মাসে রোহিতা ইউনিয়নে তিনটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। তিন ঘটনায় মুখোশধারী ডাকাতরা বাড়ির লোকজনকে মারপিট করে বেধে সবকিছু লুট করেছে। গত ২৯ অক্টোবর ভোরে ভান্ডারি মোড় সংলগ্ন আবুল কাশেমের বাড়ি হতে টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও কাঁথা-কম্বল এবং গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) মধ্যরাতে কোদলাপাড়া মোড়ে মেঘনা বেকারির মালিক মশিয়ার রহমানের বাড়ি হতে ৪ লাখ টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার লুট করেছে ডাকাতরা।
এদিকে, একমাসে তিন ডাকাতির ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও এখন পর্যন্ত তারা জড়িতদের কাউকে আটক করতে পারেনি। ফলে ইউনিয়নবাসীর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিজেদের জানমাল রক্ষায় গ্রামের লোকজন রাত জেগে পাহারা শুরু করেছেন।
রোহিতা ইউপির চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ ডিউটিরত অবস্থায় কিভাবে ডাকাতি হচ্ছে এটা ভাবার বিষয়। ডাকাতি ঠেকাতে প্রশাসন কোন কাজ করতে পারছে না।’
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘রোববার রাতের ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে ঘটেছে বলে মনে হচ্ছ। আগের ঘটনার সাথে এর যোগসূত্র নেই।’
ওসি বলেন, ‘আমরা কাজ করছি। দ্রুত ভাল কিছু করতে পারব।’