কোনো শর্ত ছাড়াই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। আজ বুধবার আইএমএফ মিশনের সঙ্গে ১৫ দিনের সিরিজ বৈঠকের সমাপনী দিনে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আইএমএফ থেকে যেভাবে ঋণ সহযোগিতা চেয়েছিলাম সেভাবেই বাংলাদেশকে মোট সাত কিস্তিতে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ দিতে যাচ্ছে। যার প্রথম কিস্তি ৪৪৮ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার ছাড়ের প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। এরপর পরবর্তী ছয় কিস্তি সমান করে মোট ৬৫৯ মিলিয়ন ডলার করে ছাড় করবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে এই ঋণ ছাড়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এ ঋণের গ্রেস পিরিয়ড রাখা হয়েছে সাড়ে পাঁচ থেকে দশ বছর।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঋণের প্রথম কিস্তি পাবে বাংলাদেশ। আজ বুধবার দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আইএমএফ মিশন জানিয়েছে তাদের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী আগামী তিন মাসের মধ্যে ঋণ প্রস্তাবের সব আনুষ্ঠানিকতা ও চূড়ান্ত বোর্ড অনুমোদন শেষ হবে। চার বছর মেয়াদে ২০২৬ সাল পর্যন্ত এই ঋণ বিতরণ করা হবে। ৭ কিস্তিতে দেওয়া হবে এই ঋণ। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঋণের প্রথম কিস্তি ছাড় করবে আইএমএফ। বাকি ছয় কিস্তি ছয় মাস পরপর ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দেওয়া হবে। এই ঋণের গড় সুদহার হবে ২ দশমিক ২ শতাংশ।
গত জুলাইয়ে বাজেট সহায়তা হিসেবে আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে আবেদন করেছে সরকার। সেই ঋণ নিয়ে আলোচনা করতে সংস্থাটির ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ২৬ অক্টোবর ঢাকা সফরে আসেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আইএমএফের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দ।
দলটি গত ১৫ দিন ধরে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে প্রায় ৩০টি বৈঠক করছে। আজ বুধবার সকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গে বৈঠক করে আইএমএফ মিশন। এরপর দুপুরে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আইএমএফের ঋণ পাওয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে অর্থমন্ত্রণালয়।
ব্রিফিং শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ পেতে যাচ্ছি। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ঋণের প্রথম কিস্তি পাওয়া যাবে। আর ২০২৬ সালের মধ্যে সব ঋণ পাওয়া যাবে।’
ব্রিফিংয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।