রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, সন্ধ্যা ৭:৪০
রবিবার, ২৮ মে ২০২৩,সন্ধ্যা ৭:৪০

আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই: প্রধানমন্ত্রী

চারিদিক ডেস্ক

২৭ অক্টোবর, ২০২২,

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

অনেক বাধা অতিক্রম করে এবং নিজস্ব অর্থায়নে পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাজ শুরু হয় এবং আরও এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। ঠিকই আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই।’ আজ বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পায়রা বন্দরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় এই কথা বলেন।

প্রায় ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং, আটটি জাহাজের উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল এবং ছয় লেনের সংযোগ সড়ক ও একটি সেতু নির্মাণ।

প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা থেকে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য একটি ফান্ড করা হয়। এই ফান্ডের নাম বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। সেখান থেকে স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে টাকা দেওয়া হয়েছে পায়রা বন্দরের উন্নয়নে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু তৈরি করেছি। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড এটা দিয়ে পায়রা বন্দরের কাজটা আমরা শুরু করলাম। ভবিষ্যতে আমরা অবকাঠামো উন্নয়নে এই ফান্ড কাজে লাগাতে পারবো।

সরকারপ্রধান বলেন, রিজার্ভের টাকা গেছে পায়রা বন্দরে, খাদ্য আমদানিতে। অনেকেই জানতে চায়, রিজার্ভের টাকা গেলো কোথায়। তাদের বলতে চাই, এটা কেউ চিবিয়ে খায়নি। রিজার্ভের টাকা গেছে আমদানিতে, মানুষের কাজেই এটা লাগাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব এটা জাতির পিতা উপলব্ধি করেছিলেন।…২১ বছর পর আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠনের সুযোগ পায়। সুযোগ পাওয়ার পরই আমাদের লক্ষ্য ছিল সমুদ্রে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। পায়রা বন্দরটা আসলে তৈরির চিন্তা যখন করি, অনেকেই বাধা দিয়েছে। এখানে সিলড, এখানে নৌ চলাচলের সুযোগ করা যাবে না, এসব বলেছে। তবে আমি নিজে এখানে প্রতিটা নদীতে ঘুরেছি। স্পিডবোটে করে করে প্রত্যেকটা চরে গিয়েছি। দেখেছি এখানকার অবস্থা। জাতির পিতার কাছে ছোটোবেলায় এই এলাকার কথা অনেক শুনেছি।

তিনি বলেন, এখানে বন্দর করা যায় কিনা বলার পর সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান নিজে এই এলাকা পরিদর্শনে আসেন।…নৌ পরিবহনের নিজেদের টাকায় কাজটা শুরু করে। অনেক বাধা ছিল, অতিক্রম করে কাজ শুরু করি। ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত জাহাজ আসতে থাকে।…পায়রা বন্দরের পাশেই পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে দিয়েছি। মূলত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা পরিবহন দিয়েই এই বন্দরের কাজটা শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কেউ বিশ্বাসই করতে পারে নাই এখানে একটা বন্দর হতে পারে। আমার নিজের ভেতরেই অনেক বাধা ছিল। বাবার কাছে ছোটোবেলায় গল্প শুনেছি, নদীতে ড্রেজিং হতো। গভীরতাটা খুব জরুরি। অনেকে বলেছে ড্রেজিং করে দিলে পরে আবার সিলড হয়ে যাবে। তবে প্রথমে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হবে, পরে নিয়মিত ড্রেজিং অব্যাহত রাখতে হবে। পয়রা বন্দরে দেশের সর্ববৃহৎ ড্রেজিংয়ের কাজ হচ্ছে।

আজ যে আটটি জাহাজের উদ্বোধন করা হলো তার মধ্যে সাতটি আমাদের দেশে তৈরি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি নৌপথকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেই। এটা সবচেয়ে কম খরচে করা যায়। শুধু সড়কে না, সব দিক থেকেই একটা যোগাযোগ করতে পারছি এই অঞ্চলের সঙ্গে। এই অঞ্চলে শিল্পকারখানা হচ্ছে, পর্যটনের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে। এখানে একটা জায়গা আছে স্বর্ণদ্বীপ, যা স্থানীয়োবে সোনার চর নামে পরিচিত। সেখানে সূ্র্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায় একই সঙ্গে। এখানে পর্যটনের সুযোগ আছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে নৌপথ সচল করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পর্যটন বাড়ানো, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর নজর দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, সারাবিশ্বে হঠাৎ করে সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। করোনা আছে, এর মধ্যে মড়ার ওপর খাড়ার ঘা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। স্যাংকশান। এটার জন্য অস্ত্র ব্যবসায়ীরা হয়তো লাভবান হচ্ছে। কিন্তু কষ্ট হচ্ছে সবার। আমরা বলেছি, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে, স্যাংকশান তুলে নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দর সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

Related Posts

আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই: প্রধানমন্ত্রী

চারিদিক ডেস্ক

২৭ অক্টোবর, ২০২২,

১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

অনেক বাধা অতিক্রম করে এবং নিজস্ব অর্থায়নে পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাজ শুরু হয় এবং আরও এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘জাতির পিতা বলেছিলেন, আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। ঠিকই আমাদের কেউ দাবায়ে রাখতে পারে নাই।’ আজ বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি পায়রা বন্দরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনের সময় এই কথা বলেন।

প্রায় ১১ হাজার ৭২ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজের মধ্যে রয়েছে বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং, আটটি জাহাজের উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল এবং ছয় লেনের সংযোগ সড়ক ও একটি সেতু নির্মাণ।

প্রধানমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকা থেকে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য একটি ফান্ড করা হয়। এই ফান্ডের নাম বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড। সেখান থেকে স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে টাকা দেওয়া হয়েছে পায়রা বন্দরের উন্নয়নে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু তৈরি করেছি। বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড এটা দিয়ে পায়রা বন্দরের কাজটা আমরা শুরু করলাম। ভবিষ্যতে আমরা অবকাঠামো উন্নয়নে এই ফান্ড কাজে লাগাতে পারবো।

সরকারপ্রধান বলেন, রিজার্ভের টাকা গেছে পায়রা বন্দরে, খাদ্য আমদানিতে। অনেকেই জানতে চায়, রিজার্ভের টাকা গেলো কোথায়। তাদের বলতে চাই, এটা কেউ চিবিয়ে খায়নি। রিজার্ভের টাকা গেছে আমদানিতে, মানুষের কাজেই এটা লাগাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব এটা জাতির পিতা উপলব্ধি করেছিলেন।…২১ বছর পর আওয়ামী লীগ আবার সরকার গঠনের সুযোগ পায়। সুযোগ পাওয়ার পরই আমাদের লক্ষ্য ছিল সমুদ্রে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। পায়রা বন্দরটা আসলে তৈরির চিন্তা যখন করি, অনেকেই বাধা দিয়েছে। এখানে সিলড, এখানে নৌ চলাচলের সুযোগ করা যাবে না, এসব বলেছে। তবে আমি নিজে এখানে প্রতিটা নদীতে ঘুরেছি। স্পিডবোটে করে করে প্রত্যেকটা চরে গিয়েছি। দেখেছি এখানকার অবস্থা। জাতির পিতার কাছে ছোটোবেলায় এই এলাকার কথা অনেক শুনেছি।

তিনি বলেন, এখানে বন্দর করা যায় কিনা বলার পর সাবেক নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান নিজে এই এলাকা পরিদর্শনে আসেন।…নৌ পরিবহনের নিজেদের টাকায় কাজটা শুরু করে। অনেক বাধা ছিল, অতিক্রম করে কাজ শুরু করি। ২০১৬ সাল থেকে নিয়মিত জাহাজ আসতে থাকে।…পায়রা বন্দরের পাশেই পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে দিয়েছি। মূলত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা পরিবহন দিয়েই এই বন্দরের কাজটা শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, কেউ বিশ্বাসই করতে পারে নাই এখানে একটা বন্দর হতে পারে। আমার নিজের ভেতরেই অনেক বাধা ছিল। বাবার কাছে ছোটোবেলায় গল্প শুনেছি, নদীতে ড্রেজিং হতো। গভীরতাটা খুব জরুরি। অনেকে বলেছে ড্রেজিং করে দিলে পরে আবার সিলড হয়ে যাবে। তবে প্রথমে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হবে, পরে নিয়মিত ড্রেজিং অব্যাহত রাখতে হবে। পয়রা বন্দরে দেশের সর্ববৃহৎ ড্রেজিংয়ের কাজ হচ্ছে।

আজ যে আটটি জাহাজের উদ্বোধন করা হলো তার মধ্যে সাতটি আমাদের দেশে তৈরি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি নৌপথকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেই। এটা সবচেয়ে কম খরচে করা যায়। শুধু সড়কে না, সব দিক থেকেই একটা যোগাযোগ করতে পারছি এই অঞ্চলের সঙ্গে। এই অঞ্চলে শিল্পকারখানা হচ্ছে, পর্যটনের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ছে। এখানে একটা জায়গা আছে স্বর্ণদ্বীপ, যা স্থানীয়োবে সোনার চর নামে পরিচিত। সেখানে সূ্র্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায় একই সঙ্গে। এখানে পর্যটনের সুযোগ আছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে নৌপথ সচল করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পর্যটন বাড়ানো, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর নজর দেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, সারাবিশ্বে হঠাৎ করে সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। করোনা আছে, এর মধ্যে মড়ার ওপর খাড়ার ঘা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। স্যাংকশান। এটার জন্য অস্ত্র ব্যবসায়ীরা হয়তো লাভবান হচ্ছে। কিন্তু কষ্ট হচ্ছে সবার। আমরা বলেছি, যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে, স্যাংকশান তুলে নিতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী পায়রা বন্দর সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

Related Posts