আশরাফ হোসেন স্বপন একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী হওয়া স্বত্বেও নিজ অর্থে গত ছয় বছর ধরে কৃতি শিক্ষার্থী ও গুণীজনদের সংবর্ধনা দিয়ে আসছেন। এবার তিনি এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের নিজ গাড়িতে কেন্দ্রে আনা-নেওয়া করছেন।
বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে। আশরাফ হোসেন স্বপন যশোরের ঝিকরগাছার বেজিয়াতলা গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে।
বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দেখা গেছে, পরীক্ষা শুরুর আগে ১৪জন শিক্ষার্থীকে আশরাফ হোসেন স্বপন তাঁর জিপে (গাড়ি) করে ঝিকরগাছা দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসা, এমএল মডেল হাইস্কুল ও পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আনেন। এ সময়ে কথা হয়, দাখিল পরীক্ষার্থী মুন্নি খাতুন ও কাজি হাসিবের সাথে। তারা বলেন, বেজিয়াতলা আলিম মাদ্রাসা থেকে পরীক্ষার কেন্দ্রটি সাত কিলোমিটার দূরে। গত পাঁচ দিন ধরে স্বপন তাদেরকে পরীক্ষা দিতে আনা-নেওয়া করছেন।
রঘুনাথনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রকিবুল ইসলাম ও ইমামুল হোসেন বলেন, বাড়ি থেকে তাদের কেন্দ্র ৮ কিলো দূরে হলেও যাতায়াতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে না। একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাঈদ হোসেন বলে, আমার বাড়ি বল্লা গ্রামে। কেন্দ্র থেকে ১৩ কিলো দূরে৷ বাবা কৃষক হওয়ায় আমার সঙ্গে যাওয়ার মতো কেউ নেই। প্রথম দিনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করার সময় স্বপন চাচা গাড়ি নিয়ে হঠাৎ আমার সামনে এসে দাঁড়ান এবং কেন্দ্রে পৌঁছে দেন। সেই থেকে তিনি নিয়মিত পরীক্ষা কেন্দ্র আনা-নেওয়া করছেন।
রঘুনাথনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম হাসানুল বান্না বলেন, স্বপনের এ উদ্যোগে পরীক্ষার্থীরা প্রকৃত উপকার পাচ্ছে। এর আগেও শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।
বাঁকড়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শামসুর রহমান বলেন, স্বপনের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। তাঁর ধারাবাহিক কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে।
আশরাফ হোসেন স্বপন বলেন, এলাকার শিক্ষার্থী ও গুণীজনদের উৎসাহ দিতে আমার এসব উদ্যোগ। এতে আমি মানসিক শান্তি পাই। যতদিন বেঁচে থাকি এ কাজটি করে যেতে চাই।
২০১৭ সাল থেকে স্বপন নিজের অর্থে এ পর্যন্ত ১ হাজার শিক্ষার্থী ও ৫০ গুণীজনকে সম্মাননা দিয়েছেন। এ বছরও ১০ গুণীজন ও এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৩০০ শিক্ষার্থীকে সম্মাননা প্রদান করেন।