গফরগাঁও (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার মশাখালী ইউনিয়নের মুখি মধ্যপাড়া এলাকা থেকে মিতু আক্তার(২৩) নামে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পাগলা থানা পুলিশ।
নিহত মিতু আক্তার ওই এলাকার তাঁরা মিয়ার মেয়ে ও গফরগাঁও সরকারি কলেজের ব্যাণিজ্য শাখার অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (২০ জুন) বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মৃতের পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মুখী মধ্য পাড়া গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল করিমের সাথে প্রায় দুই বছর ধরে একই এলাকার তাঁরা মিয়ার মেয়ে মিতু আক্তারের প্রেমেজ সম্পর্ক গড়ে উঠে। এদিন সকালে মিতু তার মাকে সাথে নিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল করিমের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের দাবি জানায়। এতে আব্দুল করিমের সাথে মিতু আক্তারের বাক-বিতণ্ডা হয়।এক পর্যায়ে আব্দুল করিম ও তাঁর স্বজনেরা মিতুকে মারধর করে টেনে ছেঁচড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর মুখি মধ্যপাড়া মিলন বেপারীর বাড়ির পিছনে জনৈক মফিজ উদ্দিনের পুকুর পাড়ে কড়ই গাছের ডালে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্নহত্যা করে মিতু। মরদেহ ঝুলে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। দুপুরে পাগলা থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নিহতের মা শেফালী খাতুন(৫০)বলেন,’সকালে আমার মেয়ে আমাকে নিয়ে করিমের বাড়িতে যায়। এসময় করিমকে আমার মেয়ে বিয়ের কথা বলে। করিম বিয়ে করবে না বলে জানালে আমার মেয়ে ‘এতদিন প্রেম করেছো কেনো’ জানতে চায়। এতে করিম ও তাঁর বাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে ও আমাকে মারধর করে টেনেহেঁছড়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। করিম মারধর ও অপমান করে আমার মেয়েকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে। আমি এর বিচার চাই।’
মিতুর ভাই গফরগাঁও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ফাহিম অভিযোগ করে বলেন,গত দুই বছর ধরে তার বোনের সাথে একই গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল করিমের প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। বারবার সে বিয়ের কথা বললেও বিয়ে করেনি। সোমবার সকালে তার বোন মিতু আক্তার করিমের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের কথা বললে সে ও তাঁর বাড়ির লোকজন মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এঘটনা জানাজানি হলে আমার বোন লজ্জায় আত্মহত্যা করে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল করিমের মোবাইল(০১৭১৪৭৯১০৭৯) নাম্বারে একাধিকবার ফোন করা হলে নাম্বারটি সব সময় ব্যস্ত দেখায়। তাই তাঁর সাথে কথা বলা সম্ভপ হয়নি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মনি বলেন লোকমুখে ঘটনা শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে বিস্তারিত জানা যাবে।
পাগলা থানার ওসি মো. রাশেদুজ্জামান বলেন,খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।