বোয়ালমারী-আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : জেলার বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের গোহাইলবাড়ি-চরদৈতরকাঠি গ্রামের জোড়া খুনের আসামিদের পক্ষে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার সাতৈর বাজার সংলগ্ন হত্যাকাণ্ড স্থানের প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ঘোষপুর সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ভাড়াটিয়া লোকজন দিয়ে এই মানববন্ধন করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি ঘোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক পূবিলা গ্রামের বাসিন্দা এসএম ফারুক হোসেন এবং মামলার ৪ নম্বর আসামি আলফাডাঙ্গা উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোহাইলবাড়ি গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের ছেলে আরিফুর রহমান উদ্যোগ নিয়ে এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে বলে জানা গেছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাবেক চেয়ারম্যান এস এম ফারুক হোসেন, ঘোষপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ রাজা, ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইজাজুল করিম মিন্টু, ঘোষপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।
জানা যায়, উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, উপজেলা কৃষকলীগের সাবেক সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় গোহাইলবাড়ি ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আহমেদের (৯৪) সাথে গোহাইলবাড়ি গ্রামের সাবেক কৃষি কর্মকর্তা মৃত বজলুর রহমান ওরফে বজলু খালাসির এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো। চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল স্থানীয় গোহাইলবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে আলাউদ্দিন আহমেদের বড় ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা জামান সিদ্দিকী ও মৃত বজলুর রহমানের ছেলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের মধ্যে দুই প্যানেলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মোস্তাফার প্যানেল বিজয়ী হয়ে পুনরায় তিনি সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে।
ঈদুল ফিতরের দিন (৩ মে) দুপুরের দিকে মোস্তফা জামানসহ নিহত-আহতরা গোহাইলবাড়ি বাজারের নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে চা খাচ্ছিলো। এ সময় আসামিরা হতাহতদের উপর রামদাসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে মোস্তফার চাচাতো ভাই আকিদুল মোল্যা (৪৫) ও কৃষকলীগ নেতা খায়রুল শেখকে (৪৭) দিবালোকে হত্যা করে। এ ঘটনায় মোস্তফার আপন দুইভাই শারিরীক প্রতিবন্ধী মাসুদ আহমেদ (৪৭) ও আলমগীর আহমেদসহ (৫০) ৮জন আহত হয়।
হত্যাকাণ্ডের পাঁচদিন পর থানায় নিহতদের চাচাতো ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক গোলাম মোস্তফা জামান সিদ্দিকী বাদি হয়ে ৮১ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদি নিহতদের চাচাতো ভাই উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা জামান সিদ্দিকী বলেন, মামলা হওয়ার পরে জোড়া খুনের আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে সাময়িক জামিন নিয়ে হত্যা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এবং দোষীদের রক্ষা করতে এ মানববন্ধন করেছে। তারপরও ঘটনাস্থলের প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে ভাড়াটে লোকজন নিয়ে মামলার আসামি ও তাদের সাঙ্গ-পাঙ্গরা মানববন্ধনে তার সম্পর্কে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন।