পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চরে আতিয়ার সরদার (৫২) নামে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১১জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আলোরকোল শুঁটকি পল্লীতে মারা যান তিনি। নিহত জেলের বাড়ি বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা চিলা গাববুনিয়া গ্রামে। এনিয়ে দুবলার চরের বৃহত্তম শুঁটকিপল্লী আলোরকোলে তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এর আগে সোমবার (৯জানুয়ারি) স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে অসীম শীল (৩৫) নামে এক নরসুন্দর এবং গত ১৩ নভেম্বর সাপের কামড়ে মনিরুল গাজী (২৭) নামে আরো এক জেলের মৃত্যু হয়। আলোরকোলের মৌসুমী ব্যবসায়ী অসীম শীলের বাড়ি মোংলায় আর মনিরুলের বাড়ি সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর গ্রামে।
দুবলা ফিশামেন গ্রুপের সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ জানান, প্রচন্ড শীতে স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা যান জেলে আতিয়ার। তিনি খুলনার রূপসা এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী আজাদ শেখের ছেলে।
বঙ্গোসাগরের কোলঘেঁষা দুর্গম চরে চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিবছর বহু জেলে ও মৌসুমী ব্যবসায়ী বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে।
ফিশারমেন গ্রুপের সভাপতি কামাল আহমেদ আরো বলেন, ‘শুঁটকি মৌসুমের পাঁচ মাসে দুবলার আওতাধীন পাঁচটি চরে ১০ হাজারেরও বেশি জেলে-মহাজন ও মৌসুমী ব্যবসায়ী অবস্থান করে। এদের মধ্যে অনেকেই নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত, সাপ ও হিংসাত্মক প্রাণির আক্রমণের শিকার হন। কিন্তু অসুস্থ বা আহতদের চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই এখানে।
তাছাড়া জনবসতি থেকে শুঁটকির চরগুলো বিচ্ছিন্ন ও দুর্গম এলাকা হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের কোথাও নেওয়ার সুযোগ থাকেনা। ফলে বিনা চিকিৎসায় তারা মৃত্যুকোলে ঢলে পড়ছে। দুর্গম এই শুঁটকি পল্লীতে অস্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানান এই মৎস্যজীবী নেতা’।
দুবলা জেলেপল্লীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ জানান, নিহত জেলে আতিয়ারের মরদেহ নিয়ে বিকেল ৩টার দিকে তার বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছে। এর আগে নিহত নরসুন্দর ও জেলের মরদেহও তাদের বাড়িতে পাঠানো হয়।