মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, রাত ২:২০
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪,রাত ২:২০

সাকিব-ইবাদত দাপটে ১৮৬ রানে অলআউট ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক

৪ ডিসেম্বর, ২০২২,

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

৩:৫৩ pm

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে তাদের ৪১.২ ওভারে ১৮৬ রানের মধ্যেই বেঁধে ফেলেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। তাতে প্রথম ম্যাচ জিততে লিটনদের প্রয়োজন ১৮৭ রান।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দেখে-শুনে করেছিলেন ভারতের দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও রোহিত। তাদের ধীর গতির সূচনায় প্রথম আঘাতটা আনেন অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ঘূর্ণিতে পুরোপুরি খেই হারান শিখর। তার ফ্লাইট ডেলিভারি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়েছেন। ১৭ বলে ৭ রান করে শিখর আউট হয়েছেন।

তার পর ১১তম ওভারে সাকিব আল হাসান বল হাতে নিয়েই সফরকারীদের বিপদে ফেলেছেন। দ্বিতীয় ডেলিভারিতে রোহিত শর্মার উইকেট উপড়ে দিয়েছেন। তার আর্ম বলের লাইন মিস করে ভারতের অধিনায়ক ক্লিন বোল্ড হয়েছেন। এক বল বিরতি দিয়ে লিটনের দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরান তারকা ব্যাটার বিরাট কোহলিকেও (৯)। তাতে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে স্বাগতিক দল। তার পর অবশ্য প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেয় আইয়ার-রাহুল জুটি। ৪৩ রান যোগ করেন তারা। দারুণ এই জুটিটি ভাঙেন এবাদত হোসেন। বার বার শর্ট বল দিয়ে ফাঁদে ফেলার কৌশলেই এই পেসার সফল হয়েছেন।

আইয়ার এবাদতের বলে পুল করতে গিয়েছিলেন। বল টপ এজ হয়ে তখন তা জমা পড়ে মুশফিকের গ্লাভসে। ফেরার আগে ভারতীয় ব্যাটার ৩৯ বলে করেছেন ২৪ রান। তার পর পঞ্চম উইকেটে লোকেশ রাহুল ও ওয়াশিংটন সুন্দরের জুটিতেই আশার সঞ্চার হয়েছিল। লোকেশতো ক্যারিয়ারের ১১তম হাফসেঞ্চুরি করে দলকে বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। ৪৯ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন লোকেশ।

তবে দুইজনের ৬০ রানের জুটির পর সাকিবের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন ওয়াশিংটন (১৯)। ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। পরের ওভারেই শাহবাজ আহমেদকে (০) ফিরিয়ে ভারতীয়দের বিপদ আরও বাড়ান এবাদত হোসেন। এবাদতের শর্ট বল খেলতে গিয়ে ঠিক মতো ব্যাট-বলে সংযোগ করতে পারেননি। ঝাঁপিয়ে পড়ে তার দারুণ ক্যাচটি নেন সাকিব।

পরের ওভারে সাকিব আক্রমণে এসেই ভারতকে তাসের ঘরে পরিণত করেছেন। নিজের প্রথম ওভারের মতো সপ্তম ওভারেও জোড়া উইকেট শিকার করেছেন তিনি। প্রথম বলে শার্দুল ঠাকুর (২) ও চতুর্থ বলে দ্বীপক চাহারকে (০) ফিরিয়ে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ৫ উইকেট নেওয়ারও কীর্তি গড়েছেন। এটি সাকিবের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ৫ উইকেট শিকারের নজির। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একবার ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুইবার ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি তার আছে। ভারতের বিপক্ষে এর আগে সাকিবের সেরা বোলিং ফিগার ছিল ২১ রানে তিন উইকেট।

১৫৬ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর মোহাম্মদ সিরাজকে সঙ্গে নিয়ে লোকেশ রাহুল ২২ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে রান আরও বাড়িয়ে নিয়েছেন। কিন্তু রাহুল ফাইন লেগে এবাদতকে খেলতে গিয়ে এনামুলের হাতে ক্যাচ দিলে ইনিংসটা আরও বড় করার সম্ভাবনার সেখানেই ইতি ঘটেছে।

আউট হওয়ার আগে ৭০ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন ভারতীয় এই ব্যাটার। এক ওভার বিরতির পর ভারতের শেষ উইকেটও তুলে নেন এবাদত। ২০ বলে ৯ রান করা মোহাম্মদ সিরাজকে ডিপ কভারে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানিয়েছেন। তাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড গড়েছে সফরকারীরা।

সাকিব ছাড়াও পেসার এবাদত হোসেন নিখুঁত বোলিং করেছেন। ১০ ওভারে ৩৬ রান খরচ করে সাকিব ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মতো ৫ উইকেট নিয়েছেন। এর পর ৮.২ ওভার বোলিং করে ৪৭ রান খরচায় চার উইকেট নিয়েছেন এবাদত হোসেন। যা তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন। মোস্তাফিজ ভালো বোলিং করলেও উইকেটের দেখা পাননি। অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসানও দারুণ বোলিংয়ে ৪৩ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৪১.২ ওভারে ১৮৬ (রাহুল ৭৩, রোহিত ২৭, আইয়ার ২৪, ওয়াশিংটন ১৯; সাকিব ৫/৩৬, এবাদত ৪/৪৭)

Related Posts

সাকিব-ইবাদত দাপটে ১৮৬ রানে অলআউট ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক

৪ ডিসেম্বর, ২০২২,

৩:৫৩ pm

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে তাদের ৪১.২ ওভারে ১৮৬ রানের মধ্যেই বেঁধে ফেলেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। তাতে প্রথম ম্যাচ জিততে লিটনদের প্রয়োজন ১৮৭ রান।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দেখে-শুনে করেছিলেন ভারতের দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও রোহিত। তাদের ধীর গতির সূচনায় প্রথম আঘাতটা আনেন অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। তার ঘূর্ণিতে পুরোপুরি খেই হারান শিখর। তার ফ্লাইট ডেলিভারি বুঝতে না পেরে বোল্ড হয়েছেন। ১৭ বলে ৭ রান করে শিখর আউট হয়েছেন।

তার পর ১১তম ওভারে সাকিব আল হাসান বল হাতে নিয়েই সফরকারীদের বিপদে ফেলেছেন। দ্বিতীয় ডেলিভারিতে রোহিত শর্মার উইকেট উপড়ে দিয়েছেন। তার আর্ম বলের লাইন মিস করে ভারতের অধিনায়ক ক্লিন বোল্ড হয়েছেন। এক বল বিরতি দিয়ে লিটনের দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরান তারকা ব্যাটার বিরাট কোহলিকেও (৯)। তাতে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে তুলে নিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে পেরেছে স্বাগতিক দল। তার পর অবশ্য প্রাথমিক ধাক্কা সামাল দেয় আইয়ার-রাহুল জুটি। ৪৩ রান যোগ করেন তারা। দারুণ এই জুটিটি ভাঙেন এবাদত হোসেন। বার বার শর্ট বল দিয়ে ফাঁদে ফেলার কৌশলেই এই পেসার সফল হয়েছেন।

আইয়ার এবাদতের বলে পুল করতে গিয়েছিলেন। বল টপ এজ হয়ে তখন তা জমা পড়ে মুশফিকের গ্লাভসে। ফেরার আগে ভারতীয় ব্যাটার ৩৯ বলে করেছেন ২৪ রান। তার পর পঞ্চম উইকেটে লোকেশ রাহুল ও ওয়াশিংটন সুন্দরের জুটিতেই আশার সঞ্চার হয়েছিল। লোকেশতো ক্যারিয়ারের ১১তম হাফসেঞ্চুরি করে দলকে বিপদের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন। ৪৯ বলে ৩ চার ও ৩ ছক্কায় এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন লোকেশ।

তবে দুইজনের ৬০ রানের জুটির পর সাকিবের বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন ওয়াশিংটন (১৯)। ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। পরের ওভারেই শাহবাজ আহমেদকে (০) ফিরিয়ে ভারতীয়দের বিপদ আরও বাড়ান এবাদত হোসেন। এবাদতের শর্ট বল খেলতে গিয়ে ঠিক মতো ব্যাট-বলে সংযোগ করতে পারেননি। ঝাঁপিয়ে পড়ে তার দারুণ ক্যাচটি নেন সাকিব।

পরের ওভারে সাকিব আক্রমণে এসেই ভারতকে তাসের ঘরে পরিণত করেছেন। নিজের প্রথম ওভারের মতো সপ্তম ওভারেও জোড়া উইকেট শিকার করেছেন তিনি। প্রথম বলে শার্দুল ঠাকুর (২) ও চতুর্থ বলে দ্বীপক চাহারকে (০) ফিরিয়ে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ৫ উইকেট নেওয়ারও কীর্তি গড়েছেন। এটি সাকিবের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ৫ উইকেট শিকারের নজির। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একবার ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুইবার ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি তার আছে। ভারতের বিপক্ষে এর আগে সাকিবের সেরা বোলিং ফিগার ছিল ২১ রানে তিন উইকেট।

১৫৬ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর মোহাম্মদ সিরাজকে সঙ্গে নিয়ে লোকেশ রাহুল ২২ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে রান আরও বাড়িয়ে নিয়েছেন। কিন্তু রাহুল ফাইন লেগে এবাদতকে খেলতে গিয়ে এনামুলের হাতে ক্যাচ দিলে ইনিংসটা আরও বড় করার সম্ভাবনার সেখানেই ইতি ঘটেছে।

আউট হওয়ার আগে ৭০ বলে ৫ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন ভারতীয় এই ব্যাটার। এক ওভার বিরতির পর ভারতের শেষ উইকেটও তুলে নেন এবাদত। ২০ বলে ৯ রান করা মোহাম্মদ সিরাজকে ডিপ কভারে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানিয়েছেন। তাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড গড়েছে সফরকারীরা।

সাকিব ছাড়াও পেসার এবাদত হোসেন নিখুঁত বোলিং করেছেন। ১০ ওভারে ৩৬ রান খরচ করে সাকিব ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মতো ৫ উইকেট নিয়েছেন। এর পর ৮.২ ওভার বোলিং করে ৪৭ রান খরচায় চার উইকেট নিয়েছেন এবাদত হোসেন। যা তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৩ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন। মোস্তাফিজ ভালো বোলিং করলেও উইকেটের দেখা পাননি। অফস্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসানও দারুণ বোলিংয়ে ৪৩ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ৪১.২ ওভারে ১৮৬ (রাহুল ৭৩, রোহিত ২৭, আইয়ার ২৪, ওয়াশিংটন ১৯; সাকিব ৫/৩৬, এবাদত ৪/৪৭)

Related Posts