বাগেরহাটের শরণখোলায় পল্লী বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গ্রাহকরা। দিনের বেলায় বিদ্যুৎ আসা-যাওয়ার তালে থাকলেও রাতে পুরো উপজেলা জুড়ে নেমে আসে ঘোর অন্ধার। এমনকি উপজেলা সদরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের কথা থাকলেও দিনের বেলায় শুধু আসা-যাওয়ার তালে থাকে। আর রাতে দেওয়া হয় সীমাহীন লোডশেডিং।
অপরদিকে, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের গ্রামাঞ্চলে এক-দুই দিনেও বিদ্যুতের দেখা পায় না মানুষ। বিদ্যুতের এমন বিপর্যয়ে দিন দিন ক্ষোভ বাড়ছে মানুষের মনে। রাতের বেলায় বিদ্যুৎ না থাকায় গ্রামে চুরির ঘটনা ঘটছে অহরহ।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার রায়েন্দা ইইনয়নের মালিয়া গ্রামে দুই বাড়িতে চুরি হয়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় এভাবে গত একমাসে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ১০ থেকে ১২ বাড়িতে চুরি সংঘটিত হয়েছে।
উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের সুন্দরবনসংলগ্ন চালিতাবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক নজরুল ইসলাম আকন ও খুড়িয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা সমাজসেবক মো. রাসেল আহমেদ জানান, তাদের এলাকায় গত শুক্রবার ও শনিবার রাত ৯টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর ১১টার দিকে আসে। ঘন্টাখানেক পর আবার বিদ্যুৎ চলে যায়। এরপর সারা রাতে আর বিদ্যুতের দেখা নেই। এভাবে প্রতিনিয়ত লোডশেডিং হওয়ায় গ্রামে চুরিসহ নানা অপরাধ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে মানুষ।
উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আসাদুজ্জামান স্বপন জানান, তাদের এলাকায় দিন-রাত মিলিয়ে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে। তাও একটানা থাকে না। সন্ধ্যার পর থেকে সারা রাতে মাত্র আড়াই থেকে তিন ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে। পুরো ইউনিয়নেই একই অবস্থা বিরাজ করছে। বিদ্যুতের মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
এব্যাপারে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শরণখোলা সাব-জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) মো. আশিক মাহমুদ সুমন বলেন, ‘বর্তমানে শরণখোলায় বিদ্যুৎ গ্রাহক ৩৩ হাজার ৫০০। গ্রাহক বৃদ্ধি পেলেও সে অনুয়ায়ী বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। দিনের বেলায় চাহিদা সাড়ে ৬ মেগাওয়াট। সেখানে পাই আড়াই থেকে তিন মেগাওয়াট। এছাড়া রাতের বেলায় পিক আওয়ারে চাহিদা থাকে সাড়ে ৯ থেকে ১০ মেগাওয়াট। সেখানে পাই কখনো তিন মেগাওয়াট আবার কখনো চার মেগাওয়াট। একারণে চাহিদা মতো বিদু্ৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, শীতের মৌসুমে লোডশেডিংয়ের মাত্রা অনেক কমে আসবে’।