ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় একটি পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। কাকডাকা ভোর হতে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত সময় পার করছেন সংশ্লিষ্ট প্রার্থীরা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সাদা-কালো পোস্টারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকার শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত। কর্মীরা হ্যান্ডবিল নিয়ে মেয়র, চেয়ারম্যান প্রার্থী, সাধারণ সদস্য প্রার্থী ও সংরক্ষিত নারী প্রার্থী ও সমর্থকরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোজোড়ে ভোট চাইছেন। গ্রাম ও পাড়া-মহল্লায় চলছে উঠান বৈঠক ও নির্বাচনী সভা। ভোটারদের মন যোগাতে প্রার্থীরা দিচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি। সাবেক, বর্তমান ও নতুন প্রার্থীরা সবাই উন্নয়নের অঙ্গীকার করে যাচ্ছেন। যুবক-বয়স্কদের বুকে জড়িয়ে ধরছেন। ভোটের দিন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নির্বাচনী উত্তাপ।
নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চায়ের দোকান, হোটেলসহ সব জায়গাতেই এখন আলোচনা নির্বাচন ঘিরে। প্রার্থীদের নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা আর নানা জল্পনা-কল্পনা। কাকডাকা ভোর হতে রাত পর্যন্ত গান-ছন্দে প্রার্থীদের নজরকাড়া ভোট ভিক্ষা। মাইকের আওয়াজে আন্দোলিত এখন অলিগলি, গ্রাম ও পাড়া-মহল্লা। এছাড়া সামাজিক মাধ্যমে চলছে অনেক প্রার্থীর সমর্থকদের নির্বাচনী প্রচারণা। কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে গণসংযোগে প্রার্থীরা ছাড়াও তাদের সমর্থকরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এদিকে, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে পৌরসভা ও তিনটি ইউনিয়নে মাঠে রয়েছেন ডজনখানেক স্বতন্ত্র প্রার্থী। মেয়র ও চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সাথে পাল্লা দিয়ে কাউন্সিলর, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যরাও রাত-দিন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন। নারী প্রার্থীদের সঙ্গে মাঠে নেমেছেন স্বামী-সন্তানরাও। তেমনি পুরুষ প্রার্থীদের পক্ষে স্ত্রী-সন্তানরাও বসে নেই। প্রত্যেক প্রার্থী আশা করছেন ভোট যুদ্ধে সেই জয়ী হবে। তবে সাধারণ ভোটাররা ভোট দেওয়ার ব্যাপারে কোনো প্রার্থীকে প্রতিশ্রুতি থেকে নিরাশ করছেন না। নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই প্রার্থীরা ভোটারদের কাছে গিয়ে তাদের আদর্শের বয়ানসহ পৌরসভা ও ইউনিয়নে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছেন।
আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু তাহের জানান, আলফাডাঙ্গা পৌরসভা ও তিনটি ইউপিতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। একই সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোটারদের ভোট প্রয়োগ করার জন্য যা যা দরকার সবকিছুই প্রক্রিয়াধীন রয়েছেন। প্রশাসন সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছে।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হবে। জনগণ যাকে ইচ্ছা ভোট দিতে পারবেন। এখানে ভয়ের কোনো কারণ নেই।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৯ ডিসেম্বর আলফাডাঙ্গা পৌরসভা ও তিনটি ইউপিতে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। আলফাডাঙ্গা পৌরসভায় ১৩ হাজার ৮৪৯, আলফাডাঙ্গা সদর ইউপিতে সাত হাজার ৫৫১ জন বুড়াইচ ইউপিতে ১৬ হাজার ২৭১ ও গোপালপুর ইউপিতে ১৩ হাজার ৮৪৮ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।