যশোর সদর উপজেলার পতেঙ্গালি এলাকায় নিখোঁজের ১২ ঘন্টা পর প্রতিবেশীর চালের ড্রাম থেকে সানজিদা নামে চার বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। এঘটনায় পুলিশ দুইজনকে আটক করেছে।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ঘটনার সাথে জড়িত আঞ্জুয়ারা বেগম,ও আব্দুল মালেক গাজী নামে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে কি কারণে এ হত্যাকান্ড তা জানাতে পারিনি পুলিশ। চার বছরের শিশু সানজিদা পতেঙ্গালী গ্রামের সোহেল হোসেনের মেয়ে।
পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা জানান, কাজ না থাকায় শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সানজিদাকে বাড়ির পাশের দোকানে নিয়ে খাবার কিনে দেন সোহেল হোসেন। এরপর বাড়িতে দিয়ে যান। তারপর থেকেই নিখোঁজ সানজিদা। পরিবারের সদস্যরাসহ প্রতিবেশীরা সারাদিন তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করে। এমনকি পুকুরে জাল ফেলেও খোঁজ করা হয় তাকে। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন সোহেল হোসেন। ওই জিডির কপি নিয়ে মেয়েকে উদ্ধারের আশায় সোহেল ও তার স্ত্রী ডিবি অফিসে যান। এরপর ডিবি পুলিশ প্রতিবেশী আঞ্জুয়ারা বেগমের চালের ড্রাম থেকে সানজিদার মৃতদেহ উদ্ধার করে।
একমাত্র মেয়ের মরদেহ উদ্ধারের পর বুক ফাটা কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন শরিফা খাতুন । একপর্যায়ে প্রিয় মেয়ের পাশে শুয়ে পড়েন। এ সময় তিনি মেয়ের হত্যাকারীর বিচার দাবি করেন। তার পাঁজর ভাঙ্গা কান্নায় কাতর হয়ে পড়েন প্রতিবেশী ও স্বজনরাও।
নিষ্পাপ শিশুকে এভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িত আঞ্জুয়ারার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে প্রতিবেশীরাও।
ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম জানান, তদন্তের একপর্যায়ে সানজিদার বাবা মায়ের সাথে থাকা আঞ্জুয়ারা বেগমের কথাবার্তায় সন্দেহ হয়। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে সে সানজিদাকে হত্যা করে নিজ ঘরের চালের ড্রামে লুকিয়ে রাখার কথা স্বীকার করেন। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আঞ্জুয়ারার বাড়িতে গিয়ে চালের ড্রাম থেকে সানজিদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এসআই মফিজুল ইসলাম আরো জানান, আঞ্জুয়ারা হত্যা সম্পর্কে একেক সময় এক এক রকম কথা বলছেন। ফলে হত্যার মূল কারণ এখনো উদঘাটন সম্ভব হয়নি। তবে আঞ্জুয়ারা জানিয়েছে, তার চালের ড্রামে চাল ছিল না। মরদেহ গোপন করার জন্য সে প্রতিবেশীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল সংগ্রহ করে আনে। এরপর তা মরদেহের উপরে ছিটিয়ে দেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘাতক আনজুয়ারা তিন বছর আগে সানজিদাদের বাড়ির পাশে জমি কিনে বসবাস শুরু করেন। তার স্বামী রেজাউল ইসলাম মাঝেমধ্যে এই বাড়িতে আসেন। রেজাউল ইসলাম বেনাপোলের পুটখালী গ্রামের বাসিন্দা।