মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, রাত ১:৩৭
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪,রাত ১:৩৭

দ্বিতীয় দফা দুর্যোগে আবারো ইলিশ ধরা বন্ধ

৫ কোটি টাকা লোকসানে শরণখোলার মহাজনরা

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা (বাগেরহাট)

১ আগস্ট, ২০২৩,

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

৮:০২ pm

নিম্নচাপের প্রভাবে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে বঙ্গোপসাগর। মঙ্গলবার (১আগস্ট) সকাল থেকে দ্বিতীয় দফায় আবারো আবহাওয়া খারাপ হতে থাকে। উত্তাল ঢেউয়ে ঠিকতে না পেরে ইলিশ আহরনে নিয়োজিত বাগেরহাটের শরণখোলাসহ উপকূলের সমস্ত ট্রলার সাগরে ছেড়ে কূলে ফিরে এসেছে। বর্তমানে প্রবল বেগে বাতাস ও থেমে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে উপকূলে।

অন্যদিকে শ্রাবনের ভরা মৌসুমেও সাগরে দেখা মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশের। নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে গিয়ে প্রথম গোনে (ট্রিপ) ইলিশ না পেয়ে শূণ্য ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরেছেন জেলেরা। উভয় সংকটে পড়ে একেক জন মহাজন দুই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা লোকসানে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলে-মহাজনরা।

৬৫দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৩ জুলাই রাতে সাগরে যান জেলেরা। পরেরদিন ২৪ জুলাই সাগরে জাল ফেলতে না ফেলতেই দুর্যোগ শুরু হয়। প্রথম দফার ওই দুর্যোগে সমস্ত ট্রলার সাগর ছেড়ে সুন্দরবনসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে নিরাপদে আশ্রয় নিয়ে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। দ্বিতীয় দফায়ও সাগর উত্তাল হওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরেছে শত শথ ট্রলার। গিয়ে গত এক সপ্তাহে দুই দফা দুর্যোগের কবলে পড়ে ঠিকমতো জাল ফেলতে পারেননি জেলেরা।

শরণখোলা সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক সামতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানিয়েছেন, আবহাওয়া চরম খারাপ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সাগরে কোনো ট্রলার নেই। উত্তাল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে সমস্ত ট্রলার পাথরঘাটার মহিপুর, চরদুয়ানীসহ উপকূলের বিভিন্ন খালে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।

ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন আরো জানান, একদিকে দুর্যোগ, অন্যদিকে ভরা মৌসুমেও সাগর ইলিশ শূণ্য। প্রথমবার দুর্যোগের পর সাগরে নেমে কোনো ট্রলারেই কাঙ্খিত ইলিশ পায়নি। কিছু ট্রলারে সামান্য পরিমান ছোট ইলিশ ধরা পড়েছে। বড় ইলিশের দেখাই মেলেনি। জ্বালানি তেল ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে একেকটি ট্রলার সাগরে পাঠাতে ২-৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ইলিশ না পাওয়ায় পুরো চালনাই লোকসান হয়েছে। শরণখোলার তিন শতাধিক ট্রলারে কম হলেও পাঁচ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সহসভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন মঙ্গলবার (১জুলাই) সন্ধ্যায় বলেন, সাগরে কোনো ইলিশ নেই। আমার দুটি ট্রলার সাগরে গিয়ে সামান্য পরিমান ইলিশ পেয়েছে। তাও আকারে খুবই ছোট। আমার তাতে প্রায় চার লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। তার ওপর এক সপ্তাহে দুই দফা দুর্যোগে পড়ে ঠিকমতো জাল ফেলতে পারেনি জেলেরা। বর্তমানে প্রবল গতিতে ঝড় চলছে সাগরে। সাগর ট্রলার শূণ্য। উপকূলের সকল মহাজনই এভাবে লোকসানে পড়েছেন।

শরণখোলা উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় ইলিশ পড়ছে না। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এখন বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এভাবে বৃষ্টি হলে সামনের গোনে ইলিশ পাওয়া যাবে।

 

Related Posts

দ্বিতীয় দফা দুর্যোগে আবারো ইলিশ ধরা বন্ধ

৫ কোটি টাকা লোকসানে শরণখোলার মহাজনরা

মহিদুল ইসলাম, শরণখোলা (বাগেরহাট)

১ আগস্ট, ২০২৩,

৮:০২ pm

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

নিম্নচাপের প্রভাবে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে বঙ্গোপসাগর। মঙ্গলবার (১আগস্ট) সকাল থেকে দ্বিতীয় দফায় আবারো আবহাওয়া খারাপ হতে থাকে। উত্তাল ঢেউয়ে ঠিকতে না পেরে ইলিশ আহরনে নিয়োজিত বাগেরহাটের শরণখোলাসহ উপকূলের সমস্ত ট্রলার সাগরে ছেড়ে কূলে ফিরে এসেছে। বর্তমানে প্রবল বেগে বাতাস ও থেমে থেকে বৃষ্টি হচ্ছে উপকূলে।

অন্যদিকে শ্রাবনের ভরা মৌসুমেও সাগরে দেখা মিলছে না কাঙ্খিত ইলিশের। নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে গিয়ে প্রথম গোনে (ট্রিপ) ইলিশ না পেয়ে শূণ্য ট্রলার নিয়ে ঘাটে ফিরেছেন জেলেরা। উভয় সংকটে পড়ে একেক জন মহাজন দুই লাখ থেকে তিন লাখ টাকা লোকসানে পড়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন জেলে-মহাজনরা।

৬৫দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৩ জুলাই রাতে সাগরে যান জেলেরা। পরেরদিন ২৪ জুলাই সাগরে জাল ফেলতে না ফেলতেই দুর্যোগ শুরু হয়। প্রথম দফার ওই দুর্যোগে সমস্ত ট্রলার সাগর ছেড়ে সুন্দরবনসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে নিরাপদে আশ্রয় নিয়ে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়। দ্বিতীয় দফায়ও সাগর উত্তাল হওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরেছে শত শথ ট্রলার। গিয়ে গত এক সপ্তাহে দুই দফা দুর্যোগের কবলে পড়ে ঠিকমতো জাল ফেলতে পারেননি জেলেরা।

শরণখোলা সমুদ্রগামী ফিশিং ট্রলার মালিক সামতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানিয়েছেন, আবহাওয়া চরম খারাপ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সাগরে কোনো ট্রলার নেই। উত্তাল ঢেউয়ে টিকতে না পেরে সমস্ত ট্রলার পাথরঘাটার মহিপুর, চরদুয়ানীসহ উপকূলের বিভিন্ন খালে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।

ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন আরো জানান, একদিকে দুর্যোগ, অন্যদিকে ভরা মৌসুমেও সাগর ইলিশ শূণ্য। প্রথমবার দুর্যোগের পর সাগরে নেমে কোনো ট্রলারেই কাঙ্খিত ইলিশ পায়নি। কিছু ট্রলারে সামান্য পরিমান ছোট ইলিশ ধরা পড়েছে। বড় ইলিশের দেখাই মেলেনি। জ্বালানি তেল ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে একেকটি ট্রলার সাগরে পাঠাতে ২-৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ইলিশ না পাওয়ায় পুরো চালনাই লোকসান হয়েছে। শরণখোলার তিন শতাধিক ট্রলারে কম হলেও পাঁচ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।

বাংলাদেশ ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সহসভাপতি এম সাইফুল ইসলাম খোকন মঙ্গলবার (১জুলাই) সন্ধ্যায় বলেন, সাগরে কোনো ইলিশ নেই। আমার দুটি ট্রলার সাগরে গিয়ে সামান্য পরিমান ইলিশ পেয়েছে। তাও আকারে খুবই ছোট। আমার তাতে প্রায় চার লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। তার ওপর এক সপ্তাহে দুই দফা দুর্যোগে পড়ে ঠিকমতো জাল ফেলতে পারেনি জেলেরা। বর্তমানে প্রবল গতিতে ঝড় চলছে সাগরে। সাগর ট্রলার শূণ্য। উপকূলের সকল মহাজনই এভাবে লোকসানে পড়েছেন।

শরণখোলা উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় ইলিশ পড়ছে না। হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এখন বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এভাবে বৃষ্টি হলে সামনের গোনে ইলিশ পাওয়া যাবে।

 

Related Posts