মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, রাত ২:০০
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪,রাত ২:০০

দেশসেরা শিক্ষার্থী নুয়েল’র ছিল না কোন স্মার্ট ফোন!

২৮ জুন, ২০২২,

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

৮:২৫ pm

মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর : ‘ছোটবেলায় বন্ধুরা বলতো কেউ ডাক্তার হবে, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, আবার কেউবা পাইলট। আমার স্বপ্ন ছিল আইন বিভাগে পড়ালেখা করে বিচারক হবো। কথাটি কাউকে বলিনি কখনও। মনের মাঝেই রেখেছিলাম। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন। এ কারণে আমার ইচ্ছা বিচারক হবো। একদিন বাবাও আমাকে বললেন, আমি চাই তুমি আইন বিভাগে পড়ালেখা করে বিচারক হও। সেদিন থেকেই স্বপ্ন লালন করে চলছি। পাশাপাশি পড়ালেখায় আরও মনোযোগি হই।’

এভাবেই কথাগুলো বললেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটে (কলা অনুষদ) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া নাহনুল কবির নুয়েল (২০)। ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র তিনি। ভর্তি পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে তিনি ৯৬.৫ পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি।

সোমবার (২৭ জুন) দুপুর ১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ফল ঘোষণা করেন।

নাহনুল কবির বলেন, ‘তখন আমি এসএসসি পরীক্ষা দেবো। ইতোমধ্যেই বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে ফেলেছি। কি করা যাবে, ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিলাম। জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হই। এরপর বাবার পরামর্শে বিজ্ঞান বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হই রাজেন্দ্র কলেজে। তখন থেকেই স্বপ্নপূরণের জন্য পড়ালেখায় জোর দিই। সেখান থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে মানবিক বিভাগে ঢাকা বোর্ডের সমন্বিত মেধা তালিকায় ২৮তম হয়ে উত্তীর্ণ হই। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ইউসিসিতে কোচিং করি। স্বপ্নপূরণের প্রথম ধাপ পার হয়েছি। এখনও অনেক পথ বাকি। আইন বিভাগে পড়ালেখা করবো। আমার স্বপ্ন, বিচারক হয়ে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।’

তিনি বলেন, ‘আব্বু-আম্মু আমার অনুপ্রেরণা। আমার এবং তাদেরও স্বপ্ন আমি বিচারক হই, তাই আব্বু-আম্মুর স্বপ্নপূরণের চেষ্টা করছি। আব্বু-আম্মু অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করেন, আমিও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবো।’

প্রতিদিন গড়ে ৯ ঘণ্টা পড়ালেখা করেছি উল্লেখ করে নাহনুল কবির বলেন, ‘একজন ছাত্র গড়ে ৯ ঘণ্টা পড়ালেখা করলে ভালো ফল করা সম্ভব। বাবা-মায়ের পাশাপাশি আমার শিক্ষকদের প্রতিও কৃতজ্ঞ। কারণ তারা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন।’

নাহনুল কবির ময়মনসিংহ সদরের ভাবোখালী ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা চাঁদপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারুল কবিরের একমাত্র সন্তান। মা নাজমুন নাহার মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা। ২০০২ সালে ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন নাহানুল। এরপর বাবার চাকরির সুবাদে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন খুলনা শহরের একটি স্কুলে।

২০১২ সালে বাবা আনোয়ারুল কবির খুলনা থেকে বদলি হয়ে আসেন ফরিদপুরে। ফরিদপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৩ সালে মা নাজমুন নাহার ফরিদপুর সদর উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। ফরিদপুরেই বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন নাহানুল। সে কারণে প্রথমে জিলা স্কুল এবং পরবর্তী সময়ে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে পড়ালেখা করেন নাহনুল। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে আনোয়ারুল কবির বরগুনায় বদলি হয়ে যান। সেখান থেকে ছয় মাস আগে বদলি হয়ে চাঁদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে সেখানে কর্মরত।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মা নাজমুন নাহার বদলি হয়ে ঘিওর উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। বাবা-মা অন্যত্র বদলি হয়ে গেলেও ফরিদপুরে থেকে পড়ালেখা চালিয়ে যান নাহানুল। ছুটি পেলেই বাবা-মা এসে নাহানুলকে দেখে যান।

নাহনুলের বাবা আনোয়ারুল কবির বলেন, ‘ছেলে ভালো ফল করায় খুশি হয়েছি। আমার অনেক শিক্ষার্থী দেশসেরা ফল করেছে, তখন ভাবতাম ছেলেটা যদি এমন ফল করতো। আজ স্বপ্নপূরণ হয়েছে। ফল ঘোষণার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন পাচ্ছি। ছেলের জন্য গর্ব হচ্ছে। ছেলের স্বপ্নপূরণ হোক সে দোয়া করি।’

তিনি বলেন, নুয়েলের বাবা বলেন, ছুটির দিনে আমরা ফরিদপুরে যেতাম তখনই কেবল আমাদের স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতো। তবে কোন গেমস বা অন্য কিছু করতো না। শিক্ষামূলক ইংলিশ ইংলিশ মুভি দেখতো। সময় নষ্ট হবে এজন্য তাকে আমরা কোন স্মার্ট ফোন কিনে দেইনি।

নাহনুলের মা নাজমুন নাহার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই খুবই শান্ত প্রকৃতির নাহানুল। পড়ালেখা নিয়েই ব্যস্ত থাকে সবসময়। তার ও বাবার ইচ্ছে ছিল নাহনুল বিচারক হবে। আইন বিষয়ে পড়ালেখা করবে। তার বাবা ইঞ্জিনিয়ার, আমি কৃষিবিদ। তাই চেয়েছি, ছেলে আইন ও বিচার বিভাগে প্রতিষ্ঠিত হোক।’

তিনি বলেন, ‘আমি এবং তার বাবা ফরিদপুর থেকে বদলি হলেও নাহনুল ফরিদপুরের বাসায় থেকে যায়। মাঝেমধ্যে ফরিদপুরে গিয়ে তাকে দেখে আসতাম। ভালো ফল করায় মনটা ভরে গেছে। ছেলে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করে বিচারক হয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে, এটাই প্রত্যাশা।’

ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অসীম কুমার সাহা বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থী দেশসেরা হয়েছে, এটা গৌরব এবং আনন্দের। ফল শোনার পর নাহানুলের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। নাহানুল যেহেতু মায়ের সঙ্গে ঘিওরে থাকে সে কারণে দেখা করা সম্ভব হয়নি। কলেজের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ সূত্রে জানা গেছে, ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় এক হাজার ৭৮৮টি আসনের বিপরীতে অংশ নেন ৫৬ হাজার ৯৭২ শিক্ষার্থী। সেখানে কৃতকার্য হয়েছেন পাঁচ হাজার ৬২২ জন। পাসের হার ৯.৮৭ শতাংশ। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন ৯০.১৩ শতাংশ।

Related Posts

দেশসেরা শিক্ষার্থী নুয়েল’র ছিল না কোন স্মার্ট ফোন!

২৮ জুন, ২০২২,

৮:২৫ pm

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

মাহবুব পিয়াল, ফরিদপুর : ‘ছোটবেলায় বন্ধুরা বলতো কেউ ডাক্তার হবে, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, আবার কেউবা পাইলট। আমার স্বপ্ন ছিল আইন বিভাগে পড়ালেখা করে বিচারক হবো। কথাটি কাউকে বলিনি কখনও। মনের মাঝেই রেখেছিলাম। পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন। এ কারণে আমার ইচ্ছা বিচারক হবো। একদিন বাবাও আমাকে বললেন, আমি চাই তুমি আইন বিভাগে পড়ালেখা করে বিচারক হও। সেদিন থেকেই স্বপ্ন লালন করে চলছি। পাশাপাশি পড়ালেখায় আরও মনোযোগি হই।’

এভাবেই কথাগুলো বললেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিটে (কলা অনুষদ) ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হওয়া নাহনুল কবির নুয়েল (২০)। ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র তিনি। ভর্তি পরীক্ষায় ১২০ নম্বরের মধ্যে তিনি ৯৬.৫ পেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি।

সোমবার (২৭ জুন) দুপুর ১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে কলা অনুষদভুক্ত ‘খ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ফল ঘোষণা করেন।

নাহনুল কবির বলেন, ‘তখন আমি এসএসসি পরীক্ষা দেবো। ইতোমধ্যেই বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে ফেলেছি। কি করা যাবে, ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিলাম। জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হই। এরপর বাবার পরামর্শে বিজ্ঞান বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগে ২০১৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হই রাজেন্দ্র কলেজে। তখন থেকেই স্বপ্নপূরণের জন্য পড়ালেখায় জোর দিই। সেখান থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে মানবিক বিভাগে ঢাকা বোর্ডের সমন্বিত মেধা তালিকায় ২৮তম হয়ে উত্তীর্ণ হই। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ইউসিসিতে কোচিং করি। স্বপ্নপূরণের প্রথম ধাপ পার হয়েছি। এখনও অনেক পথ বাকি। আইন বিভাগে পড়ালেখা করবো। আমার স্বপ্ন, বিচারক হয়ে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।’

তিনি বলেন, ‘আব্বু-আম্মু আমার অনুপ্রেরণা। আমার এবং তাদেরও স্বপ্ন আমি বিচারক হই, তাই আব্বু-আম্মুর স্বপ্নপূরণের চেষ্টা করছি। আব্বু-আম্মু অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতা করেন, আমিও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবো।’

প্রতিদিন গড়ে ৯ ঘণ্টা পড়ালেখা করেছি উল্লেখ করে নাহনুল কবির বলেন, ‘একজন ছাত্র গড়ে ৯ ঘণ্টা পড়ালেখা করলে ভালো ফল করা সম্ভব। বাবা-মায়ের পাশাপাশি আমার শিক্ষকদের প্রতিও কৃতজ্ঞ। কারণ তারা আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন।’

নাহনুল কবির ময়মনসিংহ সদরের ভাবোখালী ইউনিয়নের ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা চাঁদপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ারুল কবিরের একমাত্র সন্তান। মা নাজমুন নাহার মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা। ২০০২ সালে ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন নাহানুল। এরপর বাবার চাকরির সুবাদে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন খুলনা শহরের একটি স্কুলে।

২০১২ সালে বাবা আনোয়ারুল কবির খুলনা থেকে বদলি হয়ে আসেন ফরিদপুরে। ফরিদপুর সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উপাধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। ২০১৩ সালে মা নাজমুন নাহার ফরিদপুর সদর উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন। ফরিদপুরেই বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন নাহানুল। সে কারণে প্রথমে জিলা স্কুল এবং পরবর্তী সময়ে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে পড়ালেখা করেন নাহনুল। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে আনোয়ারুল কবির বরগুনায় বদলি হয়ে যান। সেখান থেকে ছয় মাস আগে বদলি হয়ে চাঁদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। বর্তমানে সেখানে কর্মরত।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মা নাজমুন নাহার বদলি হয়ে ঘিওর উপজেলা মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। বাবা-মা অন্যত্র বদলি হয়ে গেলেও ফরিদপুরে থেকে পড়ালেখা চালিয়ে যান নাহানুল। ছুটি পেলেই বাবা-মা এসে নাহানুলকে দেখে যান।

নাহনুলের বাবা আনোয়ারুল কবির বলেন, ‘ছেলে ভালো ফল করায় খুশি হয়েছি। আমার অনেক শিক্ষার্থী দেশসেরা ফল করেছে, তখন ভাবতাম ছেলেটা যদি এমন ফল করতো। আজ স্বপ্নপূরণ হয়েছে। ফল ঘোষণার পর বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন পাচ্ছি। ছেলের জন্য গর্ব হচ্ছে। ছেলের স্বপ্নপূরণ হোক সে দোয়া করি।’

তিনি বলেন, নুয়েলের বাবা বলেন, ছুটির দিনে আমরা ফরিদপুরে যেতাম তখনই কেবল আমাদের স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতো। তবে কোন গেমস বা অন্য কিছু করতো না। শিক্ষামূলক ইংলিশ ইংলিশ মুভি দেখতো। সময় নষ্ট হবে এজন্য তাকে আমরা কোন স্মার্ট ফোন কিনে দেইনি।

নাহনুলের মা নাজমুন নাহার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই খুবই শান্ত প্রকৃতির নাহানুল। পড়ালেখা নিয়েই ব্যস্ত থাকে সবসময়। তার ও বাবার ইচ্ছে ছিল নাহনুল বিচারক হবে। আইন বিষয়ে পড়ালেখা করবে। তার বাবা ইঞ্জিনিয়ার, আমি কৃষিবিদ। তাই চেয়েছি, ছেলে আইন ও বিচার বিভাগে প্রতিষ্ঠিত হোক।’

তিনি বলেন, ‘আমি এবং তার বাবা ফরিদপুর থেকে বদলি হলেও নাহনুল ফরিদপুরের বাসায় থেকে যায়। মাঝেমধ্যে ফরিদপুরে গিয়ে তাকে দেখে আসতাম। ভালো ফল করায় মনটা ভরে গেছে। ছেলে আইন বিষয়ে পড়ালেখা করে বিচারক হয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে, এটাই প্রত্যাশা।’

ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অধ্যক্ষ অসীম কুমার সাহা বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষার্থী দেশসেরা হয়েছে, এটা গৌরব এবং আনন্দের। ফল শোনার পর নাহানুলের বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি। নাহানুল যেহেতু মায়ের সঙ্গে ঘিওরে থাকে সে কারণে দেখা করা সম্ভব হয়নি। কলেজের পক্ষ থেকে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ সূত্রে জানা গেছে, ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় এক হাজার ৭৮৮টি আসনের বিপরীতে অংশ নেন ৫৬ হাজার ৯৭২ শিক্ষার্থী। সেখানে কৃতকার্য হয়েছেন পাঁচ হাজার ৬২২ জন। পাসের হার ৯.৮৭ শতাংশ। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন ৯০.১৩ শতাংশ।

Related Posts