ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে আছিরন বেগম (৩৫) নামে এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছে আরিয়ান (৩) নামে ওই নারীর শিশু সন্তান।
বুধবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে বোয়ালমারী পৌরসভার আমগ্রাম রেলক্রসিং এলাকায় খলিল মেম্বারের বাড়ীর সামনে কালুখালী-ভাটিয়াপাড়া রেললাইনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বোয়ালমারী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিনহাজুর রহমান লিপন জানান, বোয়ালমারী পৌরসভার শিবপুর গ্রামের রেল কর্মচারী মো. নাজিমুদ্দিন শেখের মেয়ে আছিরন বেগম কয়েক মাস আগে মানসিক রোগে আক্রান্ত হন। দুই সন্তানের জননী আছিরণ নেছা গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার কাগদী গ্রামের টুটুল মৃধার স্ত্রী। আছিরণ কবিরাজী চিকিৎসার জন্য বাবার বাড়ি শিবপুরে গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে অবস্থান করছিলেন। এদিন সকালে আছিরন বেগম তাঁর ৩ বছরের ছেলেকে কোলে করে বাবার বাড়ির পাশে রেলের উপর দিয়ে পায়চারী করছিলেন। এ সময় গোপালগঞ্জের গোবরা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান তিনি। তবে তাঁর কোলে থাকা তিন বছরের শিশু আরিয়ান দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন।
বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তারিকুল ইসলাম নাদিম জানান, আহত শিশুটির অবস্থা গুরুতর। তার একটি পা কেটে গেছে। মাথায় বড় ধরনের আঘাত রয়েছে। শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের মরদেহ উদ্ধারকারী বোয়ালমারী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ম্যানেজার আ. ছাত্তার মোল্লা বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে বোয়ালমারী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শিশুটিকে আহতাবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
বোয়ালমারী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, বুধবার সকালে গোপালগঞ্জের গোবরা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
রাজবাড়ী রেলওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় থানা পুলিশ থেকে মরদেহ বুঝে নেওয়া হয়েছে। মানসিক ভারসাম্যহীন আছিরন বেগমের বাবা ও স্বামীর এ মৃত্যুতে কোন অভিযোগ না থাকায় আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।