মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, রাত ১২:০৮
মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪,রাত ১২:০৮

টাকার জন্য স্ত্রী ও দুই মেয়েকে খুন করেন জহুরুল!

অভয়নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি

১৬ জুলাই, ২০২২,

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

৩:২৯ pm

শ্বশুরের কাছে টাকা চেয়ে না পাওয়ায় স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু (৩৩)। শুক্রবার  মধ্যরাতে নিহতের বাবা শেখ মুজিবর রহমান বাদী হয়ে আটক জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর বিরুদ্ধে যশোরের অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

শনিবার (১৬ জুলাই) সকালে নিহত সাবিনা ইয়াসমিন বীথির বাবা শেখ মুজিবর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি আরো জানান, পারিবারিকভাবে ২০১১ সালে আমার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বীথির সঙ্গে যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মশিউর বিশ্বাসের ছেলে জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর বিয়ে হয়। এরপর তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে জহুরুল আমার নিকট বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে সে আমার মেয়ে ও নাতিদের উপর শারীরিক নির্যাতন করত। মেয়ে ও দুই নাতির সুখের কথা চিন্তা করে গত বছরের ২২ জুন এক লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করি। এরপর আরো টাকা চাইলে সাবিনা তার দুই মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (৯) ও সাফিয়া আক্তারকে (২) সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসে।

পরবর্তীতে শুক্রবার (১৫ জুলাই) সকালে জামাই জহুরুল আমার বাড়িতে আসে। বিভিন্ন কথা বলে আমার মেয়ে ও দুই নাতিকে সঙ্গে নিয়ে বেলা সাড়ে ১১ টার সময় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথিমধ্যে অভয়নগরের প্রেমবাগ ইউনিয়নের চাঁপাতলা গ্রামে নূর ইসলামের কলাগাছ বাগানের মধ্যে নিয়ে স্ত্রী ও দুই মেয়ের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায় সে। এ ব্যাপারে শুক্রবার মধ্যরাতে আমি বাদি হয়ে জামাই জহুরুলের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। আমার মেয়ে ও দুই নাতির হত্যাকারী জহুরুলের ফাঁসি দাবি করছি।

এ ব্যাপারে আটক জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু স্ত্রী ও দুই মেয়েকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি শ্বশুর বাড়ি থেকে কখনও টাকা পয়সা নেয়নি। স্ত্রী ও শ্বশুরের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে আমি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছি। হত্যার পূর্বে আমি আমার স্ত্রীকে মারপিটও করেছি। নির্জন ওই কলাগাছ বাগানের সামনে পৌঁছালে আমার মনে হত্যার পরিকল্পনা আসে। প্রথমে স্ত্রীকে পরে বড় মেয়ে ও ছোট মেয়েকে হত্যা করি। এরপর এদিন বিকেলে আমি নিজে স্থানীয় বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে আত্মসমর্পণ করি। আমি একজন খুনি। আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই।

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভয়নগর থানার এসআই উত্তম কুমার মন্ড জানান, আটক জহুরুলকে আজ শনিবার যশোর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান জানান, শুক্রবার মধ্যরাতে নিহত সাবিনা ইয়াসমিন বীথির বাবা বাদী হয়ে জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শনিবার সকালে নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের চাঁপাতলা গ্রামে নূর ইসলামের কলাগাছ বাগানের মধ্যে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু। এদিন বিকালে সে পুলিশের নিকট হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেন। জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু পেশায় একজিন রাজমিস্ত্রি ছিলেন।

 

Related Posts

টাকার জন্য স্ত্রী ও দুই মেয়েকে খুন করেন জহুরুল!

অভয়নগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি

১৬ জুলাই, ২০২২,

৩:২৯ pm

Share on facebook
Share on twitter
Share on whatsapp

শ্বশুরের কাছে টাকা চেয়ে না পাওয়ায় স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু (৩৩)। শুক্রবার  মধ্যরাতে নিহতের বাবা শেখ মুজিবর রহমান বাদী হয়ে আটক জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর বিরুদ্ধে যশোরের অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

শনিবার (১৬ জুলাই) সকালে নিহত সাবিনা ইয়াসমিন বীথির বাবা শেখ মুজিবর রহমান সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

তিনি আরো জানান, পারিবারিকভাবে ২০১১ সালে আমার মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বীথির সঙ্গে যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামের মশিউর বিশ্বাসের ছেলে জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর বিয়ে হয়। এরপর তাদের সংসারে দুটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে জহুরুল আমার নিকট বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে সে আমার মেয়ে ও নাতিদের উপর শারীরিক নির্যাতন করত। মেয়ে ও দুই নাতির সুখের কথা চিন্তা করে গত বছরের ২২ জুন এক লাখ ৬০ হাজার টাকা প্রদান করি। এরপর আরো টাকা চাইলে সাবিনা তার দুই মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (৯) ও সাফিয়া আক্তারকে (২) সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসে।

পরবর্তীতে শুক্রবার (১৫ জুলাই) সকালে জামাই জহুরুল আমার বাড়িতে আসে। বিভিন্ন কথা বলে আমার মেয়ে ও দুই নাতিকে সঙ্গে নিয়ে বেলা সাড়ে ১১ টার সময় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করে। পথিমধ্যে অভয়নগরের প্রেমবাগ ইউনিয়নের চাঁপাতলা গ্রামে নূর ইসলামের কলাগাছ বাগানের মধ্যে নিয়ে স্ত্রী ও দুই মেয়ের গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে পালিয়ে যায় সে। এ ব্যাপারে শুক্রবার মধ্যরাতে আমি বাদি হয়ে জামাই জহুরুলের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। আমার মেয়ে ও দুই নাতির হত্যাকারী জহুরুলের ফাঁসি দাবি করছি।

এ ব্যাপারে আটক জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু স্ত্রী ও দুই মেয়েকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি শ্বশুর বাড়ি থেকে কখনও টাকা পয়সা নেয়নি। স্ত্রী ও শ্বশুরের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে আমি এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছি। হত্যার পূর্বে আমি আমার স্ত্রীকে মারপিটও করেছি। নির্জন ওই কলাগাছ বাগানের সামনে পৌঁছালে আমার মনে হত্যার পরিকল্পনা আসে। প্রথমে স্ত্রীকে পরে বড় মেয়ে ও ছোট মেয়েকে হত্যা করি। এরপর এদিন বিকেলে আমি নিজে স্থানীয় বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে আত্মসমর্পণ করি। আমি একজন খুনি। আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছা নেই।

জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অভয়নগর থানার এসআই উত্তম কুমার মন্ড জানান, আটক জহুরুলকে আজ শনিবার যশোর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদানের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করেছে।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম শামীম হাসান জানান, শুক্রবার মধ্যরাতে নিহত সাবিনা ইয়াসমিন বীথির বাবা বাদী হয়ে জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবুর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। শনিবার সকালে নিহত তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুরে অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ ইউনিয়নের চাঁপাতলা গ্রামে নূর ইসলামের কলাগাছ বাগানের মধ্যে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু। এদিন বিকালে সে পুলিশের নিকট হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেন। জহুরুল ইসলাম বিশ্বাস ওরফে বাবু পেশায় একজিন রাজমিস্ত্রি ছিলেন।

 

Related Posts