ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে পৌর ও ইউনিয়ন এলাকায় মাটি বিক্রির মহোৎসব চলছে। বিশেষ করে কৃষি জমির মাটির উপরিভাগ কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। অনেকে আবার নিয়মনীতি উপেক্ষা করে পুকুর কাটার নামে মাটি বিক্রির রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হলেও ঘন্টা খানেক পরে আবারো তা পুরোদমে শুরু করে।
মাটি ব্যবসায়ীরা স্থানীয় কৃষকদের কাঁচা টাকার লোভ দেখিয়ে গ্রামের ফসলি জমি ও চিত্রা, বেগবতী, কপোতাক্ষ নদের পাড়সহ ফসলি জমির বিভিন্ন স্থানে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছে ইটভাটায়। প্রকাশ্যে এই সর্বনাশা কান্ড দেখা যাচ্ছে আশপাশের এলাকাতেও। কালীগঞ্জে মোট ১৯টি ইটভাটা মালিক মাটি কিনলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই অধিকাংশের।
গাড়ি প্রতি মাটি বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ থেকে ৮শ’ টাকা দরে। এক্ষেত্রে গ্রাম কিংবা শহরে মাটি কাটার কাজে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে অনিবন্ধিত যন্ত্র দানব ট্রাক্টর। গ্রামের পর গ্রাম এই মাটি বিক্রি করে দেওয়ার সর্বনাশা খেলায় মেতে উঠেছে একটি প্রভাবশালী মহল। এতে ফসল ফলানোর জায়গা নেই হয়ে যাচ্ছে, তেমনি ঝুঁকিতে পড়ছে ঘর-বাড়ি।
বারবাজার হাইওয়ের থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘মাটি টানার কাজে অনিবন্ধিত ট্রাক্টর মহাসড়কে দেখলেও আমরা নিয়মতিভাবে মামলা দিয়ে যাচ্ছি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন, ফসলের জন্য মাটির উপরিভাগের অংশ বা টপ সয়েল সবচেয়ে জরুরি। এটি কেটে ফেলায় মাটির উর্বরতা হারাচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহ কৃষি জমির জন্য ক্ষতিকর। ওই জমিতে আশানুরুপ ফসল হবে না। এক্ষেত্রে উর্বরতা ফেরাতে অধিক পরিমানে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে।
কালীগঞ্জ সহকারি কমিশনার (ভূমি) হাবিবুল্লাহ হাবিব বলেন, ‘আমরা ইতিপূর্বে বেশ কিছু স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা আদায় করেছি। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’