সম্পর্কে একে অপরের মামাত-ফুফাত ভাই। বয়সের পার্থক্য ৪ বছর। দুজনের বাড়ির দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। বয়সের পার্থক্য বা বাড়ির দূরত্ব থাকলেও দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ছিল ঘনিষ্ঠ; বন্ধুর। লেখাপড়ার ফাঁকে একটু সুযোগ পেলেই দুজনে একসাথে বেরিয়ে পড়তেন ঘুরতে।
বুধবারও এক মোটরসাইকেলে দুই বন্ধু ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। এরপর সড়ক দুর্ঘনায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুজনেই চিরবিদায় নিলেন একসাথে।
নিহত দু’যুবক যশোরের মনিরামপুরের নাহিদ হাসান (২২) ও শিহাব হোসেন (১৮)।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মনিরামপুর-রাজগঞ্জ সড়কের কাশিপুর বটতলা নামক স্থানে মৃত্যু হয় তাঁদের।
নিহত নাহিদ হাসান উপজেলার মাছনা গ্রামের মুফতি ইসমাইল হোসেনের মেঝ ছেলে। আল কুরআনের হেফজ সম্পন্ন করে যশোরে একটি মাদরাসায় লেখাপড়া করতেন তিনি। বাবা ইসমাইল হোসেন মাছনা মাদরাসার শিক্ষক।
আর নিহত শিহাব হোসেন সম্পর্কে নাহিদের আপন মামাত ভাই। উপজেলার মোহনপুর গ্রামের স্বর্ণকার মোস্তাক হোসেনের ছেলে তিনি। শিহাব মাদানীনগর মাদরাসায় লেখাপড়া শেষে বালিয়াডাঙা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ শ্রেণিতে অধ্যায়নরত ছিলেন।
শিহাবের চাচাত বোন শাহানা সুমির বরাত দিয়ে তাঁদের প্রতিবেশী কাজী সবুজ বলেন, যশোরের মাদরাসা থেকে আসার পর নাহিদ তাঁর মামাতো ভাই শিহাবের সাথে দেখা করতে আসেন। এরপর বুধবার দুপুরে শিহাব বাবার নতুন পালসার মোটরসাইকেল নিয়ে নাহিদের সাথে ঘুরতে বের হন। সারা বিকেল ঘোরাঘুরি করে রাত সাড়ে ৭টার দিকে রাজগঞ্জে নাহিদের ফুফুর বাড়ি যান দুজনে। সেখানে রাতের খাবার শেষে ফেরার পথে সাড়ে ১০ টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুজন মারা যান।
এদিকে খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ও মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মরদেহ দুটি উদ্ধার করে মনিরামপুর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মী রাতুল মোল্লা বলেন, বুধবার রাতে দু যুবক এক মোটরসাইকেলে চড়ে রাজগঞ্জের দিক থেকে মনিরামপুরে আসছিলেন। তাঁরা কাশিপুর বটতলা নামক স্থানে পৌঁছুলে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার সেতুর সাথে আঘাত লাগে। এসময় রাস্তার পাশের খেজুর গাছের সাথে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলে দু জনের মৃত্যু হয়েছে।
কাজী সবুজ বলেন, হাসপাতাল থেকে রাতেই লাশ বাড়ি আনা হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে মাসনা মাদরাসায় একসাথে জানাজা শেষে একই স্থানে দুজনের দাফন সস্পন্ন হবে।
মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। কোন অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।