যশোরের মনিরামপুরে গৃহকর্তা ও তাঁর স্ত্রীকে বেধে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। আজ (রোববার) ভোরে উপজেলার ভাণ্ডারীমোড় সংলগ্ন নালেরকান্দা গ্রামের কাশেম আলীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মুখোশধারী ডাকাতরা কৃষক আবুল কাশেম, তাঁর স্ত্রীর ও মেয়েকে মারপিট করেছে। তারা স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ কম্বল-কাঁথা নিয়ে গেছে। আবুল কাশেম স্থানীয় কপিল উদ্দিনের ছেলে।
এদিকে ডাকাতি শেষে চলে যাওয়ার সময় ডাকাতরা একটি বড় দা ও লোহার রড ফেলে গেছে। খবর পেয়ে আজ (রোববার) সকালে মনিরামপুর থানার ওসি ও খেদাপাড়া ক্যাম্পের পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে।
কৃষক কাশেম আলী বলেন, ‘শনিবার দিবাগত রাতে আমি ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলাম। ভোর ৪টার দিকে বাইরে লোকজনের আনাগোনা টের পাই। এরপর লাইট মেরে দেখি ৬-৭ জন হাফপ্যান্ট পরা মুখোশধারী লোক বারান্দার দরজায় দাঁড়িয়ে আছে। উঠানে আরো ৫-৬ জন ছিল। সবার হাতে দা, লোহার রড রয়েছে। এ দেখে চিৎকার দিয়ে আমি ঘরের মধ্যে চলে যাই। ঘরে আমার স্ত্রী, অসুস্থ মেয়ে ও ২৫দিন বয়সী নাতী ছিল’।
কাশেম আলী বলেন, আমি ঘরে যাওয়ামাত্র ডাকাতরা গ্রীলের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢোকে। তাঁরা আমাকে ও আমার স্ত্রীকে হাত-পা ও চোখ মুখ বেধে খুব মারপিট করে ঘরের সব উল্টেপাল্টে ৩টা সোনার হার, ৫ জোড়া কানের দুল, দুটো মোবাইল ফোন, দুটো কম্বল ও কয়েকটি কাঁথা নেয়। এরপর টাকার কথা জানতে চায়। আমি নেই বললে আবার মারপিট করে। এক পর্যায়ে আমার শিশু নাতীকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে অন্য কক্ষের ড্রয়ার ভেঙে জমানো ১৫ হাজার টাকা নেয়।
কাশেম আলী আরো বলেন, ডাকাতরা বের হওয়ার সময় বাইরে দিয়ে দরজা আটকে দেয়। এরপর রাস্তায় একটা গাড়ির শব্দ পাই। সে গাড়িতে করে ওরা চলে গেছে। পরে ভোর হলে রাস্তায় লোকজনের সাঁড়া পেয়ে চিৎকার দিলে গ্রামের একজন এসে দরজা খোলে।
রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান বলেন, ভোর ৫টা ২০ মিনিটে ডাকাতির খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এরপর ক্যাম্পে খবর দিলে পুলিশ আসে।
মেহেদী হাসান বলেন, কাশেমের শ্বাশুড়ি মারা গেছেন ক’দিন আগে। মুরুব্বীর কিছু গহনা ছিল এ বাড়িতে। এছাড়া কাশেমের স্ত্রীর এক বোন বোম্বে থাকেন। তারও কিছু অলঙ্কার এখানে ছিল।
খেদাপাড়া ক্যাম্প পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সমেন বিশ্বাস বলেন, শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ৪টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলের অদূরে ভাণ্ডারীমোড়ে টহল পুলিশ ছিল। তাঁরা সরে রোহিতা বাজারে যাওয়ার পরপরই এ ঘটনা ঘটে।
সমেন বিশ্বাস বলেন, ভোরে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে ধারাল একটি বড় অস্ত্র, লোহার রড উদ্ধার করেছি। ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ভিডিও দেখে ক্লু উদ্ধারর চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় জানতে মনিরামপুর থানার ওসি মনিরুজ্জামানের সরকারি নম্বরে একাধিকবার কল করা হয়েছে। তিনি ফোন ধরেননি।