স্টাফ রিপোর্টার, যশোর : যশোরে হত্যাকাণ্ডের শিকার বরিশালের ট্রাক মালিক রেজাউল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ট্রাক চালক হৃদয়কে আটক করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে সেই ট্রাক ও মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জুন) যশোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুপন কুমার সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিবির একটি টিম কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার কাঠেরপুলে এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘাতক হৃদয়কে আটক করেন। তিনি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম নথুরা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে।
রুপন কুমার সরকার জানান, আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হৃদয় হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। রেজাউলের নিকট টাকা পেতেন তিনি। কিন্তু পাওনা টাকা না দেওয়ায় ক্ষোভে রেজাউলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। সাতক্ষীরা ভোমরা থেকে বসুন্দিয়া আসার পথে গত ২১ জুন রাত ২টার দিকে যশোর-খুলনা মহাসড়কের মুড়লী রেলক্রসিং পার হওয়ার পর রেজাউল বিশ্রাম নেন। এক পর্যায় তিনি ট্রাকের ভেতরে ঘুমিয়ে পড়েন। এই সুযোগে হৃদয় ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় রশি দিয়ে পেচিয়ে রেজাউলকে হত্যা করেন। পরে মরদেহ ওই পুকুরে ফেলে দিয়ে ট্রাক ও মোবাইল ফোন হাতিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় হৃদয়। এরপর ট্রাকটি নিয়ে কুষ্টিয়া খোকসায় যায়। সেখান থেকে পেঁয়াজ নিয়ে কুমিল্লার চান্দিনা কাঠেরপুল পেয়াজের আড়তে নিয়ে যায়। পরে হৃদয় ট্রাকের নাম্বার প্লেটটি পরিবর্তন করে ফেলেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাকে আটক করেন।
নিহত রেজাউল বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টরকীর চর গ্রামের ইউনুস বয়াতী ও মমতাজের ছেলে। তিনি নিজের ট্রাক নিজেই চালাতেন।
গত ২১ জুন যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের পদ্মবিলার ঘুনি নাথপাড়া একটি পুকুর থেকে ট্রাক চালক রেজাউলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তার পরিচয় সনাক্ত করে পরিবারকে খবর দেয়া হয়। রেজাউলের স্ত্রী হাসিনা বেগম যশোরে এসে এ ঘটনায় হেলপার হৃদয়কে আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ঘটনার তিনদিনের মাথায় ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম, এসআই জাকির হোসেন ও এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুনের সম্বন্বয়ে একটি চৌকস দল কুমিল্লা থেকে হৃদয়কে আটক করে। আজ শুক্রবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয় বলে জানিয়েছে ডিবি পুলিশ।