‘এসো মিলি প্রাণের উৎসবে, সংস্কৃতি চর্চাই হোক আগামীর প্রেরণা’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পন্ডিত রাসমোহন মিশ্রের ১৫০তম জন্মজয়ন্তী পালিত হয়েছে। শুক্রবার (২৩ ডিসেম্বর) যশোরের বাঘারপাড়া ও নড়াইল সদরের এগারোখান অঞ্চলের মালিয়াট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ জন্মজয়ন্তী পালিত হয়।
দু’দিনব্যাপি এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচি। অনুষ্ঠানের প্রথম দিন ছিলো এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যায়নরত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, শ্রী শ্রী হরিলীলামৃত পাঠ ও পন্ডিতের জীবনভিত্তিক আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানের শেষ দিন শুক্রবার ছিলো কবি বিপুল বিশ্বাসের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন ও বাউল সন্ধ্যা।
স্বর্গীয় পন্ডিত রাসমোহন মিশ্র স্মৃতি রক্ষা কমিটির আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বর্গীয় পন্ডিত রাসমোহন সেবাশ্রম সংঘের সভাপতি শিক্ষক পরিতোষ গোস্বামী। এ সময় বক্তব্য রাখেন চিত্রশিল্পী বলদেব অধিকারী, সাহিত্যিক বিপুল বিশ্বাস, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নবকৃষ্ণ বিশ্বাস, অশ্বিনী কুমার দাস, বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক, ডা. আশিষ বিশ্বাস, কমরেড নাজিমউদ্দিন, শিকদার জাহাঙ্গীর, সুরঞ্জন গুপ্ত সরজিত শিকদার, কানাইলাল মল্লিক, শিক্ষক নির্মল বিশ্বাস, মলয় বিশ্বাস ও কাজল রানী বিশ্বাস প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘১১খান অঞ্চলের (এগারো গ্রাম মিলে এগারোখান) অবহেলিত অচ্ছুত নমঃশুদ্র (নীচু জাতি) সমাজের মধ্যে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছিলেন পন্ডিত রাসমোহন মিশ্র। শর্ত সাপেক্ষে তিনি নড়াইলের জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এলাকার প্রথম এমই (মাইনর এডুকেশন স্কুল ও ক্লাস ওয়ান থেকে ষষ্ঠ) কোর্স শেষ করেন। শর্ত ছিলো, নিজে লেখাপড়া শিখে এলাকায় কাউকে শিক্ষিত করা যাবে না। কিন্তু শর্ত ভেঙ্গে ইংরেজি ১৯০৩ সালে মালিয়াট গ্রামে তিনি একটি পাঠশালা প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। এর জন্য কয়েকবার কারাবরণও করতে হয় তাকে। এ ছাড়াও তৎকালীন সময়ে নড়াইলের নিরালি বাহিরডাঙ্গা ও মনিরামপুরের নীচুজাতের মধ্যে আরও কয়েকটি পাঠশালা খুলেছিলেন পন্ডিত মশাই।’
বক্তারা আরও বলেন, ‘বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহামুকার শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের শিক্ষা বিস্তারের আন্দোলনে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজে প্রথম শিক্ষিত হয়েছিলেন রাসমোহন। মহান এ পন্ডিত ইংরেজি ১৮৭২ সালে মালিয়াট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৬১ সালে ভারতে মৃত্যুবরণ করেন। রাসমোহন মিশ্র আনন্দ মোহন ও আহ্লাদিনী মিশ্রের ছয় সন্তানের চতুর্থ সন্তান ছিলেন।